গঙ্গাসাগর মেলা

এখনও স্বাভাবিক হল না লঞ্চ চলাচল

প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছিল, এ বার সাগরমেলায় ভাটার সময়েও ভেসেল পরিষেবা চালু থাকবে তীর্থযাত্রীদের জন্য। কিন্তু মেলা শুরু হতেই সেই দাবি খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে। রোজ দীর্ঘক্ষণ ধরে ভেসেল আটকে পড়ছে। জ‌লের গভীরতা না থাকাই যার কারণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

লঞ্চের অপেক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র।

প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছিল, এ বার সাগরমেলায় ভাটার সময়েও ভেসেল পরিষেবা চালু থাকবে তীর্থযাত্রীদের জন্য। কিন্তু মেলা শুরু হতেই সেই দাবি খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে। রোজ দীর্ঘক্ষণ ধরে ভেসেল আটকে পড়ছে। জ‌লের গভীরতা না থাকাই যার কারণ। ভেসেল পরিহবহণের সঙ্গে যুক্ত সকলে ড্রেজিংকেই এ জন্য দায়ী করছেন। যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পিবি সালিমের দাবি, ড্রেজিং যতটা করা সম্ভব তা হয়ে গিয়েছে। পূর্ণিমার কোটাল বলে এখন একটু বেশি সময় আটকাচ্ছে। মেলার মূল তিন দিন দেড় ঘণ্টার বেশি আটকাবে না। মঙ্গলবার ভাটার সময়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল কাকদ্বীপ-কচুবেড়িয়া ভেসেল পরিষেবা। বুধবার তা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার উপরে। এ দিন বেলা দেড়টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভেসেল চালানো যায়নি ভাটা পড়ে গিয়েছে বলেই। তার জেরে সাধারণ নিত্যযাত্রী এবং তীর্থযাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ লট-৮ ঘাটের ৪ ও ৫ নম্বর জেটিতে ভিড় জমে যায়।

Advertisement

মেলায় ভিড় হতে শুরু করেছে। সামনের চার পাঁচ দিনে তা আরও বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। কিন্তু তার আগেই ২ থেকে ৪ নম্বর জেটির মাঝে গত পরশু থেকে নতুন চর জেগে উঠেছে। যদি ভেসেল চরে আটকে পড়তে শুরু করে, তা হলে আর দু’তিন দিনে এসে পড়া লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিয়ে প্রশাসনের হাল আরওল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছেন মেলা আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত অনেকে।

এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রায় দেড়শো মিটার লম্বা কংক্রিটের ৪ নম্বর জেটি জুড়ে বসে পড়েছেন অনেকে। বেশিরভাগই ভিন রাজ্যের বয়স্ক মানুষ। কেউ কেউ ক্লান্তিতে শুয়ে পড়েছেন জেটির উপরেই। দেখা হল উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা ওমপ্রকাশ মিশ্র এবং রাম ভজনদের সঙ্গে। বললেন, ‘‘কখন ভেসেল চলবে, বুঝতেই পারছি না। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বসে আছি। বাথরুম যাওয়ারও ব্যবস্থা দেখছি না এখানে।’’

Advertisement

লট-৮ ঘাটে এমনিতেই সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে শৌচালয়ের সমস্যা। তিনটি শৌচালয়ই ভিআইপিদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে যেতে হচ্ছে বাঁশের ব্যারিকেড টপকে, বিপজ্জনক ঢাল বেয়ে নদীর চরে। সেখানে হোগলা পাতার অস্থায়ী শৌচাগার ব্যবহার করছেন মানুষ। জোয়ারের সময়ে যা নদীর জলে মিশে যাচ্ছে। যে দীর্ঘ সময়ে মানুষ ঘাটে অপেক্ষা করছেন, ঠিক সে সময়েই বন্ধ শৌচাগার।

ভেসেল পারাপারের সঙ্গে যুক্ত আইএনটিটিইউসি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা শক্তিপ্রসাদ মাইতির কথায়, ‘‘আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিলাম আমরা। পলি কেটে অনেকটা উপরে না ফেললে সমস্যা বাড়বে। তাই হয়েছে, ভুল ড্রেজিং করার জন্যই।’’ ঝুঁকি নিয়ে পারাপারে ভেসেল চড়ায় আটকে পড়লে যে কোনও সময়ে বিপদ হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন