প্রসেনজিৎ পাণ্ডে।
চোদ্দো বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। বুধবার বনগাঁ পকসো আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ইন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় মিত্র ওই নির্দেশ দেন।
বনগাঁ মহকুমা আদালতের মুখ্য ভারপ্রাপ্ত সরকারি আইনজীবী সমীর দাস বলেন, ‘‘বিচারক ওই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।’’ বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘প্রসেনজিৎ পাণ্ডে নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ৩৭৬/২ (আই) এবং পকসো আইনের ৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল।’’
মাত্র ৩১ দিনের মধ্যে ওই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বর মাসে বনগাঁতে পকসো আদালত শুরু হয়। মামলাটি বনগাঁর পকসো আদালতে আসে। সমীরবাবু বলেন, ‘‘বনগাঁর পকসো আদালতে এটাই প্রথম মামলা। মাত্র চল্লিশ দিনের মধ্যে মামলার রায় ঘোষণা হল। পকসো আইনে জেলায় এই প্রথম কারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। মামলায় মোট ১৪ জন সাক্ষী ছিলেন। জেলহাজতে রেখেই যুবকের বিচার হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী গত বছর নভেম্বর মাসে বাগদায় তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ৩ নভেম্বর সকালে ঘরে বসে টিভি দেখছিল সে আর তার ছ’বছরের ভাই। দিদিমা স্কুলে পড়ান। তখন বাড়ি ছিলেন না তিনি। মা গিয়েছিলেন এটিএম থেকে টাকা তুলতে। প্রতিবেশী যুবক প্রসেনজিৎ সে সময়ে ওই বাড়িতে হাজির হয়। ভাইকে গেম খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সে পাশের ঘরে নিয়ে যায়। এরপরেই কিশোরীর ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে তাকে ধর্ষণ করে। অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪ নভেম্বর বাগদা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ওই দিনই পুলিশ প্রসেনজিৎকে গ্রেফতার করে। বারাসত জেলা আদালতে কিশোরী বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয়।
এ দিন আদালতে মেয়েটি আসেনি। এসেছিলেন মা। তিনি বলেন, ‘‘এই রায়ে আমরা খুশি। পুলিশ ও আইনজীবীরা সহযোগিতা করেছেন।’’ দোষীর পরিবারের অবশ্য দাবি, প্রসেনজিৎকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।