স্থানীয় মানুষকে বাদ দিয়ে অন্য জেলা থেকে শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। এই দাবিতে ফ্রেজারগঞ্জের হেনরি আইল্যান্ডের মৎস্য প্রকল্প দফতরে বিক্ষোভ দেখাল সিপিএম এবং কংগ্রেস। সোমবার দুপুর সাডে ১২টা থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ চলে। পরে ফ্রেজারগঞ্জ এবং নামখানা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ফ্রেজারগঞ্জ থেকে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে স্থানীয়দের কাজে না নিয়ে হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান, বাঁকুড়ার মতো দূরের জেলাগুলি থেকে লোক নিয়োগ করা হচ্ছে ওই প্রকল্পে। যদিও মৎস্য উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে তাঁদের কোনও নির্দেশ নেই।’’ মৎস্য উন্নয়ন নিগমের অধীনে হেনরি আইল্যান্ডসের প্রায় ১৩০ হেক্টর ভেড়িতে নোনা, মিষ্টি এবং মিশ্র জলেরও বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছ উৎপাদন হয়। শ্রমিক হিসেবে এতদিন ফ্রেজারগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেই শ্রমিক সরবরাহ করা হত। কয়েকমাস ধরে তাঁদের বসিয়ে বাইরে থেকে লোক নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এলাকার আর কোনও লোক এই দফতরে কাজ পায়নি। স্থানীয়দের একাংশ মনে করেন, এলাকার পঞ্চায়েতটি সিপিএমের অধীনে। বেশির ভাগ মানুষই এখানে সিপিএম করেন। সেই কারণেই হয়তো এই এলাকা থেকে লোক নেওয়া হয় না।
ফ্রেজারগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের শ্যামলী দাস বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষ কেন কাজ পাবে না? দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্যও বাইরে থেকে লোক কেন নিয়ে আসতে হবে? সেখানে কেবলমাত্র তৃণমূলের কিছু প্রভাবশালীদের আত্মীয়েরাই কাজ পাচ্ছেন। এ দিন তাই প্রতিবাদ করে প্রকল্প আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’’ অদক্ষ, আংশিক দক্ষ এবং দক্ষ শ্রমিকরা যথাক্রমে ১৮০, ২৭০ এবং ৩৬০ টাকা করে পান প্রকল্পে দৈনিক কাজের জন্য।
প্রকল্পে প্রায় ৬৫ জন কাজ করছেন। তার মধ্যে স্থানীয় কিছু শ্রমিক রয়েছেন। এলাকার প্রায় ৪০ জন শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে এদিন তিনটি দলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। যদিও প্রকল্প আধিকারিকদের দাবি, মৎস্য উন্নয়ন নিগমের এমডি যেরকম নির্দেশ দিয়েছেন, সে ভাবেই কাজ চলছে। সৌম্যজিৎবাবুর অবশ্য দাবি, শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে সদর দফতর থেকে কোনও নির্দেশ দেওয়া নেই। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ জানার দাবি, ‘‘স্থানীয়দের চাকরি হয়নি, এটা ঠিক নয়। আর যাঁদের হয়েছে, তাঁদের অন্য এলাকার প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে।’’