উদ্ধার: বোমা। আমডাঙায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ
মাস কয়েক আগে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল আমডাঙার বিস্তীর্ণ এলাকা। শাসক এবং বিরোধীদের লড়াইয়ে কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল এলাকা। পুলিশের হিসেবে তিন দিনে আমডাঙার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার বোমা পড়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের।
ভোটের মুখে বিরোধীরা দাবি তুলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী আগে থেকে রুট মার্চ করুক এলাকায়। রবিবার কেন্দ্রীয় বাহিনী আমডাঙার বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করে। সোমবার সেই এলাকা থেকেই মিলল ৬০টি তাজা বোমা। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী আরও বেশি করে এলাকায় টহল দিক। তারা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় থাকলে এমন বোমা-অস্ত্র আরও উদ্ধার হবে। বাসিন্দারা শান্তিতে ভোট দিতে পারবেন।
আমডাঙা থানার পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার ভোরে বিভিন্ন এলাকায় রুটিন টহল চলছিল। তারাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের শঙ্করপুর সেতুর পাশে ফাঁকা মাঠে তারা চারটি প্লাস্টিকের ড্রাম পড়ে থাকতে দেখে। পুলিশ কর্মীরা দেখেন, চারটি ড্রামে বোমা রাখা রয়েছে। মোট ৬০টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। কারা সেগুলি ফাঁকা মাঠে রেখে গেল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। যদিও, রাত পর্যন্ত বোমা রহস্যের কিনারা করতে পারেনি তারা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয়দের আশঙ্কা, ভোটের জন্য এলাকায় প্রচুর বোমা-অস্ত্র মজুত করা রয়েছে। দু’পক্ষের হাতেই যথেষ্ট বোমা রয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। তাঁরা মনে করছেন, ভোটের মুখে ফের এলাকা দখল নিয়ে দু’পক্ষের লড়াই বাঁধতে পারে। তার ফলে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।
পঞ্চায়েত ভোটে আমডাঙার তিনটি পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি শাসকদল। তৃণমূল তাদের ঘর ভেঙে বোর্ড গঠন করার চেষ্টা করছে অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন বিরোধীরা। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তাতে তৃণমূলের দু’জন এবং সিপিএমের এক জনের মৃত্যু হয়। তার পরে পুলিশ ওই এলাকার বিভিন্ন বাগান, মাঠ এবং পুকুর থেকে কয়েকশো বোমা উদ্ধার করে। সিপিএম সমর্থক বহু পরিবারকে এলাকাছাড়া হতে হয়।
তার পরেও এলাকায় শান্তি ফেরেনি। গোলমালের আশঙ্কায় ওই পঞ্চায়েতগুলিতে এখনও বোর্ড গঠন করা যায়নি। বোর্ড গঠন হয়নি আমডাঙা পঞ্চায়েত সমিতিতেও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের মুখে এলাকায় প্রচুর বোমা ও অস্ত্র মজুত করা রয়েছে। কিন্তু সে সব উদ্ধার করতে নামলে ফের এলাকা অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে এলাকায় অশান্তি হবে না বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তারাবেড়িয়া এলাকার ব্যবসায়ী মকবুল আলম বলেন, ‘‘ভোট এলেই আমাদের ঘুম ছুটে যায়। কখন কোথায় যে গোলমাল শুরু হবে, জানি না। ফাঁকা মাঠে কেউ তাজা বোমা ফেলে গেল মানে, এলাকায় আরও কত বোমা মজুত আছে কেউ জানে না। নির্বাচন কমিশন হস্তক্ষেপ করুক। তা না হলে আমাদের ফের ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হবে।’’