দুর্ঘটনা: মৃত ছাত্রীর সাইকেল পড়ে রয়েছে পথে।
স্কুল থেকে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীটি। ট্রাকের চাকা পিষে দিয়ে গেল তাকে। ট্রাক ফেলে পালিয়েছে চালক। সেটিতে ভাঙচুর চালায় জনতা। চালক মদ্যপ অবস্থায় থাকার ফলেই দুর্ঘটনা, উঠছে এমন অভিযোগ।
সোমবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আমডাঙার বোদাইয়ে। দেহ আটকে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষজন। পুলিশ এলে জনতার সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে। পরে পুলিশের আশ্বাসেই ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃষ্টি মণ্ডল (১১) নামে মেয়েটি পড়ত বোদাই উচ্চ বিদ্যালয়ে। বোদাইয়ের মাঝপাড়ার বাড়িতে ফিরছিল সে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোদাই-সন্তোষপুর রোড ধরে দ্রুত গতিতেই আসছিল একটি ট্রাক। সেটি এসে মুখোমুখি ধাক্কা মারে বৃষ্টির সাইকেলে। ট্রাকের সামনের চাকার সঙ্গে জড়িয়ে যায় সাইকেল। ছোট্ট মেয়েটির দেহের উপর দিয়ে চলে যায় ট্রাকের চাকা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় বৃষ্টি।
চোখের সামনে ঘটনাটি দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার মানুষ। ট্রাকের পিছু নেয় জনতা। মাঝপথে গাড়ি ফেলে পালায় চালক।
স্থানীয় বাসিন্দা মনোজ মুলা বলেন, ‘‘এই রাস্তা ধরে স্কুলের ছেলেমেয়েরা যাতায়াত করে। কিন্তু প্রায়শই মদ্যপ অবস্থায় প্রচণ্ড গতিতে ট্রাক চালাচ্ছে অনেকে। প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে বারবার পুলিশ-প্রশাসনকে বলা হলেও সুরাহা হয়নি।’’
বেড়াচাঁপায় জনরোষে পুড়ল অটো।
চাষবাস করে মেয়েকে পড়াচ্ছিলেন বৃষ্টির বাবা বিশ্বজিৎ মণ্ডল। ঘটনা শুনে বিশ্বাসই করতে চাইছিলেন না। শুধু বললেন, ‘‘আমার এত ভাল মেয়েটা আমার। ওর সঙ্গে খারাপ কিছু হতেই পারে না।’’
অন্য একটি পথ দুর্ঘটনায় এ দিনই পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী জখম হয় দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৫টা নাগাদ স্কুল থেকে অটোতে করে বেড়াচাঁপার কুঁচেমোড়া এলাকার বাড়িতে ফিরছিল চৌরাশিয়া হাইস্কুলের ছাত্রী জাহানারা খাতুন। বেড়াচাঁপা-পৃথিবা রোডের উত্তরপাড়া মোড়ে অটো থেকে নামতেই পিছন থেকে আর একটি অটো এসে জাহানারাকে ধাক্কা মারে। তাকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পরে অটো ফেলে পালায় চালক। ক্ষিপ্ত জনতা অটোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে।
ক’দিন আগেই ওই এলাকায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে শরমিন খাতুন নামে একই স্কুলেরই দশম শ্রেণির এক ছাত্রী মারা যায়। সে কারণেই এ দিন জনরোষ আরও বেড়েছিল বলে জানাচ্ছেন এলাকার মানুষজন।
ছবি: সুদীপ ঘোষ ও সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়