Basanti Highway

বাসন্তী রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণে কাটা পড়েছে কয়েক হাজার গাছ

সম্প্রতি যশোর রোডে গাছ কাটার উপরে স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকার আদালতে জানিয়েছে, একটি গাছ কাটার পরিবর্তে পাঁচটি নতুন গাছ লাগানো হবে।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৪
Share:

নিধন: কাটা হয়েছে এমন বহু গাছ। নিজস্ব চিত্র

বাসন্তী রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। প্রায় সাড়ে ২৮ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ভাঙা পড়েছে বহু বাড়ি-ঘর, দোকান, সরকারি প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে রাস্তার দু’পাশের বহু গাছও কাটা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অনেক প্রাচীন গাছ।

Advertisement

সম্প্রতি যশোর রোডে গাছ কাটার উপরে স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকার আদালতে জানিয়েছে, একটি গাছ কাটার পরিবর্তে পাঁচটি নতুন গাছ লাগানো হবে। কিন্তু অভিযোগ, রাস্তা সম্প্রসারণ বা অন্য কাজে গাছ কাটা হলেও নতুন গাছ আর লাগানো হয় না। লাগানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে যায়। বাসন্তী রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণের কাজেই গত দু’বছরে কাটা পড়েছে কয়েক হাজার গাছ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটিও নতুন গাছ লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ।

কলকাতার সায়েন্স সিটি থেকে শুরু করে বাসন্তীর গদখালি পর্যন্ত বিস্তৃত বাসন্তী রাজ্য সড়ক। সম্প্রতি বাসন্তীর সরবেড়িয়া বাজার থেকে গদখালি পর্যন্ত সাড়ে ২৮ কিলোমিটার রাস্তা চওড়া হয়েছে। প্রচুর গাছ কাটতে হয়েছে। সব থেকে বেশি গাছ কাটা পড়েছে মসজিদবাটি পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে গদখালি সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার দু’পাশে প্রচুর মেহগনি, সোনাঝুড়ি, কৃষ্ণচুড়া, রাধাচুড়া গাছ ছিল।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা রবিন মণ্ডল, কানাই সর্দারেরা জানালেন, রাস্তার দু’পাশে গাছগুলি এলাকার সৌন্দর্য বাড়িয়েছিল। সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটক বা এলাকার মানুষ— সকলেরই প্রিয় ছিল রাস্তার দু’পাশে এই গাছের সারি। কিন্তু রাস্তা চওড়া করতে গিয়ে সে সব কেটে ফেলা হয়েছে। এখন এলাকা মরুভূমির মতো হয়ে গিয়েছে।

পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে কাজ করেন বাসন্তীর বাসিন্দা দীনবন্ধু দেবনাথ। তিনি বলেন, “এমনিতেই যথেচ্ছ ভাবে গাছ কাটার ফলে আবহাওয়ার তারতম্য হয়েছে গত কয়েক বছরে। বৃষ্টি তুলনামূলক ভাবে কমে গিয়েছে। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের খেসারত সকলকেই দিতে হবে। বাঁচতে চাইলে আরও বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। তবেই পরিবেশে সমতা ফিরবে।”

পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, “দিনের পর দিন সবুজ ধ্বংস হচ্ছে। এলাকার উন্নয়নের জন্য রাস্তা দরকার। কিন্তু এক সঙ্গে এতোগুলি গাছ কাটা হল, সেগুলির বিকল্প হিসাবে গাছ তো লাগাতে হবে। না হলে পরিবেশের উপর এর প্রভাব পড়বে। সরকারি উদ্যোগে যত দ্রুত সম্ভব গাছ লাগানো হোক।”

বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “এই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য রাস্তার দু’পাশে বাড়িঘর, দোকান, সরকারি দফতর সবই ভাঙতে হয়েছে। বহু গাছও কাটা পড়েছে। রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলেই সরকারি উদ্যোগে রাস্তার দু’পাশে নতুন করে বৃক্ষরোপণ হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন