আক্রান্ত: হাসপাতালে জখম প্রেমিক। নিজস্ব চিত্র
প্রেমের ফুল সদ্য ফুটেছে। প্রথম বার ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপনের কথা। দু’জনে চেয়েছিল, বচ্ছরকার এই দিনটায় দু’জনে দেখা করবে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায়, মেয়ের পরিবার। তাঁরা মেয়েকে জানিয়ে দেয়, ভ্যালেন্টাইন ডে-তে বাড়ির বাইরে পা রাখা যাবে না।
ফোনে সে কথা জানতে পেরে প্রেমিককে বুধবার সন্ধ্যায় দেখা করতে বলে মেয়েটি। প্রেমিক সাইকেল চালিয়ে মেয়েটির বাড়ির সামনের রাস্তায় হাজির হয়। প্রেমিকাও বাড়ি থেকে লুকিয়ে রাস্তায় এসে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করে।
পাশাপাশি দাঁড়িয়ে গল্পগুজব করছিল। এমন সময়ে গ্রামের দুই যুবক তাদের দেখে ফেলে। তারা গিয়ে মেয়েটির বাড়ির সদস্যদের সে কথা জানিয়ে দেয়। রে রে করতে করতে তাঁরা ছুটে আসেন। রণমুর্তি দেখে প্রেমিক সাইকেল ফেলে পালিয়ে জঙ্গলে লুকিয়ে পড়ে।
নবম শ্রেণিতে পড়া মেয়েটির পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে টানতে টানতে বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রেমিকের খোঁজ শুরু হয়।
জঙ্গলে গভীর রাত পর্যন্ত কাটিয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রেমিকের মনে হয়েছিল, এ বার পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে এসেছে। কিন্তু সে বুঝতে পারেনি, প্রেমিকার বাড়ির লোকজন তখনও ঘিরে আছে এলাকা। প্রেমিক ঝোপজঙ্গল থেকে বেরিয়ে সাইকেলে চাপতে যাবে, এমন সময়ে তাকে পাকড়াও করে মেয়ের বাড়ির লোকজন। শুরু হয় মারধর। বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ছেলেটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, ছেলেটির মা প্রেমিকার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ছেলের মায়ের কথায়, ‘‘প্রচুর মারধর করেছে। ছেলে খারাপ কিছু করেছে মনে করলে আমাদের হাতে তুলে দিতে পারত। পুলিশকে জানাতে পারত। কিন্তু সে সবের ধার ধারেনি ওরা। মেয়েটিকে আমার ছেলে ভালবাসে। ওর সঙ্গে যা হয়েছে, ঠিক হয়নি।’’
হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে প্রেমিক বলে, ‘‘আমরা দু’জনেই দু’জনকে ভালবাসি। মারধর করে আমাদের আলাদা করা যাবে না।’’