জলপান: জলপ্রকল্পের উদ্বোধনে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
একগুচ্ছ নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কের উপস্থিতিতে হই হই করে চলল সরকারি অনুষ্ঠান। ভাষণ দিলেন অনেকে। যা মাইকের মাধ্যমে ছড়িয়েও পড়ল দিকে দিকে।
কিন্তু মঙ্গলবার ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা। ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত পরীক্ষা চলে। তার মধ্যে কী ভাবে মাইক বাজিয়ে সরকারি অনুষ্ঠানের অনুমতি মিলল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।
এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিঙের সাতমুখী হাটের সবুজ সঙ্ঘের মাঠে জলপ্রকল্পের উদ্বোধন করেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন জয়নগর কেন্দ্রের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামিমা শেখ, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা, দফতরের মুখ্য বাস্তুকার মলয় ভৌমিক প্রমুখ৷
অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। তার আগে থেকেই মাইকে ঘোষণা শুরু হয়েছিল। গানও বেজেছে। আশেপাশের দু’তিন কিলোমিটারের মধ্যে স্কুল অবশ্য নেই। কিন্তু মাইকের শব্দ বহু দূর থেকে শোনা গিয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় মানুষজন।
সুব্রতবাবুকে অনুষ্ঠান শেষে প্রশ্ন করা হয়েছিল মাইক বাজানো নিয়ে। তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। তবে পাশ থেকে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলে ওঠেন, ‘‘দাদা এই এলাকার আশেপাশে কোনও স্কুল নেই যেখানে পরীক্ষা হচ্ছে। তাই কোনও সমস্যা নেই।’’ এরপরেই মন্ত্রী গাড়িতে গিয়ে উঠে পড়েন।
অনুষ্ঠানের কোনও অনুমতিই ছিল না বলে জানাচ্ছে ক্যানিং মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা। তা হলে কী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা? শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে যেখানে সভা, সেখানে এমন প্রশ্নের উত্তর যে মিলবে না, তা ধরেই নেওয়া যায়। প্রত্যাশিত ভাবে উত্তর মেলেওনি।ক্যানিং ১ ব্লকের বাণীবাদা বেলেখালি, ধর্মতলা, মৌখালি, দক্ষিণ রেঁদোখালি, কলাড়িয়া ও সংলগ্ন মৌজায় পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। প্রকল্পের জন্য ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের সুবিধা পাবেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এ ছাড়াও, এ দিন ক্যানিং ১ ব্লকের বুধোখালি, বাঁশড়া, উত্তর অঙ্গদবেড়িয়া, ভলেয়া ও সংলগ্ন মৌজায় পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মন্ত্রী। ওই প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৮ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা।