পত্রিকার প্রচ্ছদেও নজর কাড়ল বনগাঁ

সাহিত্য পত্রিকা বা লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ করার চল বনগাঁয় বহু দিন ধরেই। বিশেষ করে শারদোৎসবের সময়ে এই পত্রিকা বেশি করে প্রকাশিত হয়। পুজোর মরসুম শেষ করে যা পৌষে এসেও রেশ রেখে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৪
Share:

পত্রিকার সম্ভার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

সাহিত্য পত্রিকা বা লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ করার চল বনগাঁয় বহু দিন ধরেই। বিশেষ করে শারদোৎসবের সময়ে এই পত্রিকা বেশি করে প্রকাশিত হয়। পুজোর মরসুম শেষ করে যা পৌষে এসেও রেশ রেখে গিয়েছে।

Advertisement

পুরনো পত্রিকাগুলির পাশাপাশি প্রতি বছরই নতুন সাহিত্য পত্রিকা বনগাঁ শহরে প্রকাশিত হয়। এ বার নতুন পত্রিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, উন্মুক্ত, সময়ের মুখ, দর্পণ-সহ অন্যান্য। তবে এ বার বনগাঁর পত্রিকাগুলির প্রচ্ছদ দেখে সকলেই আপ্লুত। ক্লাব স্যুভেনিয়রগুলির প্রচ্ছদও গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি ঝকঝকে, আকর্ষণীয় হয়েছে।

পত্রিকা প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত সাহিত্য কর্মীরা যে এই বিষয়ে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা করেছেন, তা প্রচ্ছদগুলি দেখলেই বোঝা যায়। প্রচ্ছদের মাধ্যমে কিছু পত্রিকায় সাম্প্রতিক সময়কে ধরার চেষ্টা হয়েছে। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি বাইরের শিল্পীদের দিয়েও প্রচ্ছদ আঁকানো হয়েছে। কোনও কোনও পত্রিকায় আবার আলোকচিত্রের ব্যবহার দেখা গিয়েছে। অতীতে দেখা গিয়েছে, প্রথমসারির কয়েকটি পত্রিকা যেমন শিস, এবং অন্যকথা, চড়ুইপত্র, অণ্বেষা, কবিতা আশ্রম, রোপণ, সুচেতনার মতো পত্রিকাগুলিতে ভালমানের প্রচ্ছদ থাকত। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে প্রচ্ছদের বিষয়ে মনোযোগী রয়েছে প্রায় সব পত্রিকা গোষ্ঠীই।

Advertisement

প্রচ্ছদের বিষয়ে পত্রিকাগুলি মনোযোগী হওয়ায় স্থানীয় কবি সাহিত্যিকেরাও খুশি। এক সাহিত্যিকের কথায়, ‘‘প্রচ্ছদ হচ্ছে পত্রিকার মুখ। পত্রিকা হাতে নিয়ে প্রচ্ছদটিই সকলের আগে চোখে পড়ে। তা ছাড়া, প্রচ্ছদের মাধ্যমে পাঠকের কাছে একটি সদর্থক বার্তাও পৌঁছে দেওয়া যায়।’’

প্রচ্ছদের পাশাপাশি প্রতিটি পত্রিকা এ বারে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়েছে। ছাপা ও পাতা বাঁধানো— সব কিছুতেই যত্নের ছাপ। এক প্রবীণ কবির কথায়, ‘‘এ বারের পত্রিকাগুলি দেখে মনে হচ্ছে, সব ক’টি পত্রিকাই খুব যত্ন করে, ভালবেসে করা হয়েছে। অতীতে কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের খেদ ছিল।’’

বেশির ভাগ পত্রিকাগুলি সাজানো হয়েছে, প্রবন্ধ গল্প, কবিতা, গুচ্ছ কবিতা, ছোট গল্প দিয়ে। স্থানীয় লেখকদের পাশাপাশি রাজ্যের বা ও পার বাংলার কবি-সাহিত্যিকদের লেখাও এ বার বনগাঁর সাহিত্য পত্রিকাগুলিতে জায়গা করে নিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের চারিপাশে যা কিছু অসহিষ্ণুতা দেখা গিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এই পত্রিকাগুলির মাধ্যমে। প্রয়াত সাহিত্যিককে নিয়ে সংখ্যা হয়েছে। নদী-নালা-খাল-বিল নিয়ে বিশেষ সংখ্যা হয়েছে। তা ছাড়াও, বিষয়ভিত্তিক আরও কিছু পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। জেলায় দীর্ঘদিন কাজ করা এক পুলিশ কর্তা তথা নদিয়ার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘কর্মসূত্রে রাজ্যের বহু এলাকায় কাজ করতে হয়েছে। কিন্তু বনগাঁ শহরের শারদ উৎসবকে কেন্দ্র করে যে সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা দেখেছি তা আরও কোথাও দেখিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন