প্রতীকী ছবি।
রাত তখন প্রায় আড়়াইটে। জেগে নেই কেউ। হঠাৎই বিস্ফোরণের প্রবল শব্দে ঘুম ভাঙল। আকাশ তখন লাল হয়ে উঠেছে আগুনের হল্কায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বড় বড় আগুনের গোলা ছিটকে উঠছিল বিস্ফোরণের শব্দের সঙ্গে সঙ্গে। প্রায় এক কিলোমিটার দূরেও গিয়ে পড়ে সেই সব। প্রচুর বাড়ি পুড়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদদ্ধ হন অনেকে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার ভালুকা গ্রামে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় জখম হয়েছেন ৬ জন দমকল কর্মী-সহ ২২ জন। তাঁদের কলকাতা, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার নানা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত লড়াই করে দমকলের ৯টি ইঞ্জিন আগুন আয়ত্তে এনেছে। তবে সোমবার এলাকার অনেকে আতঙ্কে বাড়িমুখো হননি।
প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল জানিয়েছে, ‘বিশাল’ ওই কারখানাটি তৈরি হয়েছিল ২০০৬ সালে। জেলা অগ্নি নির্বাপণ আধিকারিক মিলন নাগ বলেন, ‘‘কী করে ঘটনা ঘটল, তদন্ত শুরু হয়েছে। কারখানার কাগজপত্র যথাযথ ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাজি কারখানার লাইসেন্স পুলিশ দেয় না। দমকলের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরেই কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া সীমান্ত লাগোয়া ওই এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে কিছুটা এগোলেই মরিচা পঞ্চায়েতের ভালুকা গ্রাম। জনবসতিপুর্ণ এলাকায় বাজি কারখানাটি তৈরির সময় থেকেই আপত্তি তুলেছিলেন এলাকার মানুষ।
কারখানার এক কর্মী জানান, রবিবার রাত আড়াইটা নাগাদ হঠাৎই কারখানার এক পাশ থেকে আগুন বেরোতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা দমকলে খবর দেন। বারাসত থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কারখানার পিছনে রয়েছে গুদাম। উৎসবের মরসুমে সেখানে মজুত করা ছিল প্রচুর বাজি, বারুদ। গুদামে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বিপত্তি বাড়ে।