মালয়েশিয়ায় চাকরি করতে গিয়ে বাসন্তীর শিবগঞ্জের যুবক সুব্রত মাইতি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল। তাঁর পাসপোর্ট, ভিসা কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ফলে দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। বিষয়টি জানিয়ে বাসন্তী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সুব্রতবাবুর মা পারুল দেবী। অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুব্রতবাবুর একটি কিডনি খারাপ। তিন বছর আগে তাঁর বাবা মারা যান। সংসার চালাতে তিনি শিবগঞ্জ বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছিলেন। কিন্তু সেটি তেমন চলেনি। বাজারে তাঁর বাবার কয়েক লক্ষ টাকা দেনা ছিল। সেই দেনা শোধ করতে চাকরির খোঁজ করছিলেন তিনি। তখনই জানতে পারেন বাবার বন্ধু বাসন্তীর নতুনহাটের বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডল মালয়েশিয়ায় কয়েক জনকে চাকরি করে দিয়েছেন। এরপর সুশান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুব্রত। সুশান্তের কথা মতো নিজের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাতটি কম্পিউটার এবং নিজের মোটরবাইকটি বিক্রি করে দেন তিনি। এ ছাড়াও, তাঁর মা বাজার থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা ধার করে মোট দেড় লক্ষ টাকা সুশান্তকে দেন। এরপরে মালয়েশিয়ায় চাকরি করতে যান সুব্রত।
সুব্রতের মা পারুলদেবী জানান, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পরে তিন-চার মাস সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু তারপরেই সমস্যা শুরু হয়। তাঁর দাবি, ছেলেকে কম্পিউটারের কাজ দেওয়া হবে বলা হলেও সেটা দেওয়া হয়নি। বদলে একটি বাল্ব তৈরির কারখানায় কাজ দেওয়া হয়। ছেলে সেই কাজ করতে না চাওয়ায় তাঁর উপর অত্যাচার শুরু হয়। তাঁর পাসপোর্ট, ভিসা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পারুলদেবীর অভিযোগ, সুশান্তকে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি পাত্তা দিচ্ছেন না। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ছেলের একটি কিডনি নেই। ওখানে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমাকে মালয়েশিয়া দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলছে। কিন্তু সে সব কী ভাবে করতে হয় আমি কিছুই জানি না।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, সুশান্তকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ছেলেকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যদিও সুশান্ত টেলিফোনে দাবি করেন, ‘‘আমি সুব্রতকে একটি কাজের যোগাযোগ করে দিয়েছিলাম। তার পাসপোর্ট, ভিসা ছিল না। সেগুলির ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। কিন্তু তাঁকে যে কাজ দেওয়া হয়েছিল সে সেটি না করে সেই কোম্পানি থেকে পালিয়ে গিয়েছে।’’