তরুণীকে গুলি করে গাড়ির সামনে ঝাঁপ

ছোট যাত্রিবাহী গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে বসে কয়েকজন। হঠাৎ গাড়ির পাশে এসে হাজির এক যুবক। জানলার পাশেই বসে এক তরুণী। জানলার কাচও নামানো হয়নি তখনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোপালনগর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

ধৃত: রণজিৎ বৈদ্য

ছোট যাত্রিবাহী গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে বসে কয়েকজন। হঠাৎ গাড়ির পাশে এসে হাজির এক যুবক। জানলার পাশেই বসে এক তরুণী। জানলার কাচও নামানো হয়নি তখনও।

Advertisement

এলাকা: গোপালনগর বাজার এলাকার বনগাঁ-চাকদহ সড়ক। সময়: সকাল সাড়ে ৯টা।

দিনের শুরুটা নতুন কিছু ছিল না। কিন্তু হঠাৎই যেন গাড়ির পাশে মাটি ফুঁড়ে উঠল এক যুবক। কোমরে গোঁজা পাইনগান বের করল। জানলার ধারে বসা তরুণী কিছু আঁচ করে ওঠার আগেই তাঁকে লক্ষ্য করে চালিয়ে দিল গুলি। রক্তাক্ত তরুণী গাড়ির ভিতরে আর্তনাদ করে উঠলেন।

Advertisement

আশেপাশের লোকজন ততক্ষণে বুঝে গিয়েছেন কাণ্ডটা কী ঘটল। দেখা গেল, ওই যুবক পকেট থেকে আরও একটা গুলি বের করে কাঁপা হাতে পাইপগানে ভরার চেষ্টা করছে। লোকজন রে রে করে তেড়ে আসায় সে দৌড় দিল। এক রকম ঝাঁপ দিল চলন্ত একটি গাড়ির সামনে। চালক অবশ্য দ্রুত ব্রেক কষায় চোট পেল না যুবক।

এলাকায় থাকা পুলিশ কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা ধরে ফেলেন ওই যুবককে। পরে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে রণজিৎ বৈদ্য নামে স্থানীয় রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা ওই যুবককে। পুলিশের কাছে সে দাবি করেছে, তরুণীকে খুন করে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল সে। সে জন্যই দ্বিতীয় গুললিটা ভরছিল আগ্নেয়াস্ত্রে। লোকজন চারদিক থেকে ছুটে আসায় গাড়ির সামনে ঝাঁপ দিয়ে মরতে চেয়েছিল। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি কোথা জোগাড় হল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।’’

কিন্তু কেন এই আক্রমণ?

পুলিশের অনুমান, প্রেমঘটিত কারণই আছে এর পিছনে। যুবকটিও তদন্তকারীদের জানিয়েছে সে কথা। রণজিতের দাবি, বনগাঁর বাসিন্দা বছর তেইশের ওই তরুণীর সঙ্গে তার বছর দু’য়েকের সম্পর্ক। কিন্তু ইদানীং তাতে চিড় ধরেছিল। তরুণীর বিয়ের ঠিক হয়েছে অন্যত্র। সেটাই সহ্য করতে পারেনি প্রেমিক-প্রবর। তাই খুনের চেষ্টা।

রণজিৎ বলে, ‘‘ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না। এমন শাস্তি দিন, যেন আর কখনও জেল থেকে বেরোতে না হয়।’’

তরুণীকে জখম অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। পরে পাঠানো হয়েছে আরজিকর হাসপাতালে। তাঁর কাঁধে গুলি লেগেছে। তাঁর অবশ্য দাবি, জানাশোনা ছিল রণজিতের সঙ্গে। কিন্তু প্রেমের সম্পর্ক তো দূর, রণজিৎ যে তাঁকে ভালবাসত, তাই জানতেন না ওই তরুণী। তাঁর কথায়, ‘‘ও কেন গুলি চালাল, তা বুঝতেই পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন