তারের জালে লুকিয়ে বিপদ

এক ঝলক দেখে মনে হবে মাকড়সার জাল। সরু-মোটা, সাদা-কালো সব তার এমন ভাবে জড়িয়ে পেঁচিয়ে রয়েছে যে বোঝার উপায় নেই সেটি একটি বিদ্যুৎ স্তম্ভ। বিদ্যুৎ, কেবল, সিসিটিভি-র তারের সঙ্গেই রয়েছে অবৈধ হুকিংও। পাশাপাশি প্রতিটি স্তম্ভে ঝুলছে নানা সাইজের অসংখ্য পোস্টার, প্ল্যাকার্ড।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

বারাসত শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০২:৩৮
Share:

এক ঝলক দেখে মনে হবে মাকড়সার জাল। সরু-মোটা, সাদা-কালো সব তার এমন ভাবে জড়িয়ে পেঁচিয়ে রয়েছে যে বোঝার উপায় নেই সেটি একটি বিদ্যুৎ স্তম্ভ। বিদ্যুৎ, কেবল, সিসিটিভি-র তারের সঙ্গেই রয়েছে অবৈধ হুকিংও। পাশাপাশি প্রতিটি স্তম্ভে ঝুলছে নানা সাইজের অসংখ্য পোস্টার, প্ল্যাকার্ড। এমনই হাল উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসত শহরের প্রায় সব বিদ্যুৎ স্তম্ভেরই।

Advertisement

এই বাতিস্তম্ভগুলির তারের জটে শর্ট সার্কিটের ফলে মাঝেমধ্যেই ঝলসে ওঠে আগুন। দেখতে পেলে তড়িঘড়ি নেভানো হয় বটে, কিন্তু একটু দেরি হলেই ছড়িয়ে পড়ে তা। যেমন কয়েক দিন আগেই বারাসত স্টেশনের কাছে একটি স্তম্ভে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে পুড়ে যায় পাঁচটি দোকান।

অথচ এ ভাবে স্তম্ভে বিদ্যুতের তার ছাড়া যে অন্য কোনও তার বা পোস্টার লাগানোর নিয়ম নেই, তা জানাচ্ছে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাই। সংস্থার বারাসতের ডিভিশনাল ম্যানেজার মৌপালি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেউ নিষেধ মানেন না। এ দিকে, কেব্‌ল ইত্যাদি পরিষেবা যেহেতু সাধারণ মানুষের কাছে যায় সে জন্য আমরা খুলে দিতে গেলে সমস্যা হয়। এগুলি সচেতনতার ব্যাপার।’’ শুধু আগুন লাগার সমস্যা নয়, বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাই জানাচ্ছে, স্তম্ভে অন্য তার লাগানো নিষেধ কারণ প্রতিটি স্তম্ভের নির্দিষ্ট ক্ষমতা থাকে। বেশি তার ও হোর্ডিংয়ের জন্য সেগুলি হেলে পড়ে, হালকা ঝড়েই ভেঙে যায়।

Advertisement

বিদ্যুতের কোনও সমস্যা হলে স্তম্ভে উঠে কর্মীদের কাজ করতেও অসুবিধা হয়। এ দিকে, প্রায়শই কোনও না কোনও সভা লেগে থাকে বারাসতে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারে ঠাসা বিদ্যুৎস্তম্ভগুলি থেকেই হুকিং করে চলে প্রচার, বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তার কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়।

কিন্তু এত সমস্যা সত্ত্বেও একটুও বদলায়নি বারাসতের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলির ছবি। চাঁপাডালি মোড়ে গিয়ে দেখা গেল বাতিস্তম্ভগুলিতে তারের জট। সেখানে কর্তব্যরত এক বিদ্যুৎকর্মীর কথায়, ‘‘এত তারের মধ্যে কোন তার কেটে গিয়েছে খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়।’’

ডাকবাংলো মোড়ে আবার মাটি থেকে বিদ্যুৎ স্তম্ভকে জড়িয়ে রয়েছে সরু-মোটা নানা তার। ভারে হেলে পড়েছে বেশ কিছু স্তম্ভ। উল্টো দিক থেকে তার দিয়ে টেনে স্তম্ভগুলিকে আটকে রাখা হয়েছে। আবার কলোনি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের এ পাশ থেকে ও পাশে চলে দিয়েছে তার। তার নীচ দিয়েই যাতায়াত করছে সমস্ত যান, পণ্যবাহী ট্রাকও।

এক বাসিন্দার অভিযোগ, আবাসনের জানালা, বারান্দার সঙ্গেও বিপজ্জনক ভাবে বেঁধে দেওয়া হয়েছে তার। জানলা খোলা যায় না। হেলা বটতলায় চার মাথা মোড় থেকে ব্যারাকপুর রোডের দিকেও চলে গিয়েছে কেবলের তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন