Matua Community

সাজো সাজো রব, কাল শুরু মতুয়া ধর্ম মহামেলা

প্রতি বছর মতুয়াদের আরাধ্য হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে ঠাকুরনগরে মতুয়া ধর্ম মহামেলার আয়োজন করা হয়।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ১০:০১
Share:

সমাগম: ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে আসতে শুরু করেছেন মতুয়া ভক্তেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

কাল, রবিবার ভোর থেকে ‘পুণ্যস্নানের’ মধ্যে দিয়ে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে শুরু হচ্ছে ‘মতুয়া ধর্ম মহামেলা’। চলবে সাত দিন। বেশি মানুষকে এই মেলা দেখার অনুরোধ জানিয়ে শুক্রবার টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লিখেছেন, ‘মতুয়া ধর্ম মহামেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। যা মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি প্রদর্শন করে। আমি আরও বেশি মানুষকে মেলা দেখার অনুরোধ করব। দয়া ও সেবার পথ দেখানোর জন্য মানুষ চিরকাল শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের কাছে ঋণী থাকবেন’।

Advertisement

গত তিন বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে ঠাকুরবাড়িতে ভক্তদের সমাগম অনেক কম হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এ বার পুণ্যার্থীর সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছে মেলা কমিটি। ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের’ সঙ্ঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘আশা করছি এ বার ধর্ম মহামেলা উপলক্ষে প্রায় ৪০ লক্ষ ভক্ত আসবেন পুণ্যস্নান করতে। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মতুয়া ভক্ত, পাগল, গোসাঁই, দলপতিদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’’

প্রতি বছর মতুয়াদের আরাধ্য হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে ঠাকুরনগরে মতুয়া ধর্ম মহামেলার আয়োজন করা হয়। দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তেরা আসেন। কামনাসাগরে (বড় একটি পুকুর) ‘পুণ্যস্নান’ সারেন তাঁরা। ভক্তদের বিশ্বাস, ওই বিশেষ তিথিতে কামনাসাগরে ডুব দিলে পুণ্যলাভ হয়। রোগমুক্তি ঘটে। স্নানের পর ভক্তেরা হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দেন।

Advertisement

অতীতে বাংলাদেশের ওরাকান্দিতে ওই ধর্ম মহামেলা শুরু হয়েছিল। ১৯৪৮ সাল থেকে ঠাকুরনগরে মেলা হচ্ছে। ধর্ম মহামেলা উপলক্ষে মতুয়া ভক্তদের জন্য রেল মন্ত্রক বেশ কিছু বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। শান্তনু বলেন, ‘‘৮ জোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ১৬ জোড়া লোকাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে মতুয়া ভক্তদেরজন্য। উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, অসম, ছত্তীশগঢ়, ঝাড়খণ্ড ও এ রাজ্যের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি থেকেও ট্রেনের ব্যবস্থা করাহয়েছে।’’

মহামেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যেই মতুয়া ভক্তেরা ঠাকুরবাড়িতে আসতে শুরু করেছেন ডঙ্কা, কাঁসি নিয়ে। ঠাকুরনগর জুড়ে তোরণ লাগানো হয়েছে। জলসত্র খোলা হয়েছে। বসেছে কয়েক হাজার দোকানপাট। অন্য একটি ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’-এর সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র ও বাংলাদেশ থেকে অনেক ভক্ত চলে এসেছেন। আশা করছি, মেলায় এ বার ৪০-৪৫ লক্ষ মানুষআসবেন।’’

মহামেলায় নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর হয়েছে বনগাঁ জেলা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে চারশো পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার মেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন। বনগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজলকান্তি বিশ্বাসের নেতৃত্বে ঠাকুরনগরে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প থাকছে। মমতা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের মতুয়া উন্নয়ন বোর্ডের তরফে মেলায় আসা ভক্তদের জন্য জল-বাতাসা, চিঁড়ে, মুড়ি ও বিনামূল্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন