হাসনাবাদে তৈরি ভবন পড়ে, মিলছে না চিকিৎসা

তিন বছর আগে তৈরি হয়েছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু এখনও চিকিৎসা পরিষেবা শুরু হয়নি। জমিদাতা হাজি এলাহিবস্ক মোল্লাও চান, জমি ফিরিয়ে দিক স্বাস্থ্য দফতর। এলাকায় যে ভাবে জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে, তার জেরে পুরনো দাবি এখন নতুন করে জোরদার হচ্ছে মানুষের।

Advertisement

নির্মল বসু

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৩
Share:

কবে-খুলবে: প্রতীক্ষায় গ্রামের মানুষ। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসা শুরু হোক, নয় তো ফিরিয়ে দেওয়া হোক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য দেওয়া দানের জমি— এই দাবি নিয়ে ক্ষোভ জমেছে হাসনাবাদের খোর্দ্দ গ্রামের মানুষের।

Advertisement

তিন বছর আগে তৈরি হয়েছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু এখনও চিকিৎসা পরিষেবা শুরু হয়নি। জমিদাতা হাজি এলাহিবস্ক মোল্লাও চান, জমি ফিরিয়ে দিক স্বাস্থ্য দফতর। এলাকায় যে ভাবে জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে, তার জেরে পুরনো দাবি এখন নতুন করে জোরদার হচ্ছে মানুষের।

হাসনাবাদের জলসেরিয়া ও গাঁড়াকপির মাঝে খোর্দ্দ গ্রাম। স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাহিবস্ক বছর চারেক আগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ৫ কাঠা জমি দান করেছিলেন। তিন বছর আগে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য দোতলা বাড়ি তৈরি হয়। নেতা, স্বাস্থ্যকর্তা— সকলের উপস্থিতিতে ঘটা করে বাড়ির উদ্বোধন হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মাসে এক-আধবার একজন স্বাস্থ্যকর্মী এসে তালা খুললেও কোনও চিকিৎসক আসেন না। ওষুধ দেওয়া হয় না।

Advertisement

ইতিমধ্যেই প্রতিবেশী জলসেরিয়া গ্রামে ডেঙ্গিতে প্রাক্তন এক ফুটবলার-সহ ২ জন মারা গিয়েছেন। গাঁড়াকপি, খোর্দ্দ গ্রাম জুড়ে মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। অথচ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা পরিষেবার পরিবর্তে দরজায় তালা ঝুলছে।

এই ঘটনায় রবিবার স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আসমা বিবি, মাজেদা বিবি, রাজমা বিবিরা বলেন, ‘‘গ্রামে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠায় মনে হয়েছিল গরিব মানুষের একটু সুরাহা হল। কিন্তু ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন হলেও চিকিৎসা মিলছে না।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চালু না হওয়া ভবনে দুষ্কৃতীদের আড্ডা জমছে। শিশুদের পোলিও খাওয়াতে, টিকাকরণের জন্যও ৪ কিলোমিটার দূরে ঘোলা বা আড়াই কিলোমিটার দূরে গাঁড়াকপি চিকিৎসা শিবিরে যেতে হচ্ছে।

খোর্দ্দ গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, মাঠের মাঝে ধানগাছে ঘেরা জমিতে দাঁড়িয়ে আছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন। দরজায় তালা ঝুলছে। জানলার কাচ ভাঙা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। জলসেরিয়া গ্রামে শিবিরে গিয়েছিলেন বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি, হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। তালার কথা শুনে নীতেশবাবু বলেন, ‘‘কেন এই অবস্থা, খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অরিন্দমবাবুর কথায়, ‘‘সম্প্রতি এক বৈঠকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ তা জানতে পারি। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা মিটিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খোলার ব্যবস্থা করা হবে।’’ হাসনাবাদের বিএমওএইচ সর্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খোলার জন্য একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। নানা ঝামেলার জন্য খোলা সম্ভব হচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন