বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় ফুলবাই

শারীরিক সুস্থতা ফিরতে দেখা যায়, বছর তিরিশের ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের নাম পর্যন্ত বলতে পারছিলেন না তিনি।  হাসপাতালের চিকিৎসকদের চেষ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজেই জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ভুনায় বাড়ি তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০২:০১
Share:

হাসপাতালে ফুলবাই। নিজস্ব চিত্র

টিটাগড়ের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত তাঁকে। পায়ে বিশাল ক্ষত। একদিন অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে পাওয়া গেল রাস্তায়। ততদিনে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে টিটাগড় থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। মাস ছয়েক আগে তাঁর ঠাই হয় ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালে।

Advertisement

শারীরিক সুস্থতা ফিরতে দেখা যায়, বছর তিরিশের ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের নাম পর্যন্ত বলতে পারছিলেন না তিনি। হাসপাতালের চিকিৎসকদের চেষ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজেই জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ভুনায় বাড়ি তাঁর। নাম ফুলবাই। টিটাগড় থানা মধ্যপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। খুব শিগগিরই তাঁকে বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হাসপাতালের সুপার সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, মহিলার পায়ে বড়সড় একটি ক্ষত ছিল। সংক্রমণের জন্য তিনি হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন। প্রাথমিক ভাবে সেই চিকিৎসাই করা হয়েছিল। তাতে তিনি সুস্থও হয়ে যান। পরে দেখা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালেরই এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তাঁর চিকিৎসা করেন।

Advertisement

মাস চারেকের চিকিৎসায় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। পায়ের ক্ষতও সেরে যায়। সুস্থ হতেই চিকিৎসকদের নিজের নাম-ঠিকানা জানান ফুলবাই। মাস খানেক আগে টিটাগড় থানাকে ফুলবাইয়ের সুস্থতার কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার পরে পুলিশও তাঁর সঙ্গে কথা বলে। তিনি পুলিশকে বাড়ির বিস্তারিত ঠিকানা জানান। জানান, তাঁর দুই ছেলে রয়েছে। টিটাগড় থানার পুলিশ জানিয়েছে, তার পরেই মধ্যপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় ব্লক প্রশাসনকেও। সেখান থেকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরাও ফুলবাইকে বাড়িতে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুস্থ হওয়ার পর থেকেই বাড়ি ফেরার জন্য ছটফট করছেন ফুলবাই। সব সময় বলছেন, ‘‘আমার ছেলেদের জন্য মন খারাপ করছে। আমাকে তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।’’ মধ্যপ্রদেশ থেকে তিনি কী ভাবে ব্যারাকপুর এলেন? সেই প্রশ্নের কোনও জুতসই জবাব দিতে পারছেন না তিনি। কখনও বলছেন, চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতায় আনা হচ্ছিল। তার পরে কোনও ভাবে তিনি হারিয়ে যান। কলকাতা বা আশপাশে তাঁর কোনও আত্মীয় রয়েছে কিনা, তাও জানাতে পারেননি তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুস্থ হয়ে উঠলেও ফুলবাইয়ের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন