নিরাপত্তায়: হাবরায় সোনার দোকানে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সোনার দোকানিদের ভরসা জোগাতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে হাবরায়।
ভরসন্ধ্যায় সোনারপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার পরে হাবরা শহরের সোনার দোকানের মালিকদের মধ্যে পুরনো স্মৃতি নাড়া দিয়ে উঠেছে। অতীতে হাবরাতেও দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সোনার দোকানে ঢুকে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছিল। তা-ও আবার ভরসন্ধ্যাতেই। ওই ঘটনার পরে সোনার দোকানের মালিকেরা নিরাপত্তার দাবি তুলেছিলেন। সোনারপুরের ঘটনার পরে শহরের সোনার দোকানের নিরাপত্তা নিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বেশির ভাগ দোকানেই সিসি ক্যামেরা, অ্যালার্ম বা নিরাপত্তা রক্ষী নেই। এক দোকান মালিকের কথায়, ‘‘রাতে বাড়ি ফিরে গিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারি না, যতক্ষণ না সকালে দোকানে এসে সব কিছু ঠিকঠাক দেখি।’’ আর দিনেদুপুরে যে আক্রমণ হবে না, তারই বা কী ভরসা!
তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে হাবরা থানা ও স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী শহরের সোনার দোকানের নিরাপত্তা বাড়াতে তৎপর হয়েছেন।
কয়েক বছর আগে হাবরা শহরে স্টেশন রোডের কাছে একটি সোনার দোকানে সন্ধ্যায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরবর্তী সময়ে শহরের নিরাপত্তা বাড়াতে গুরুত্বুপূর্ণ মোড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। সোনারপুরের ডাকাতির ঘটনার পরে হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের সোনার দোকানের নিরাপত্তা কেমন আছে, তা জানতে ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। তিনি নিজে তো বটেই, থানার পুলিশ অফিসেরা শহরের প্রতিটি সোনার দোকানে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন।
শুক্রবারই মৈনাকবাবু একটি সোনার দোকানে গিয়েছিলেন। সেখানে একজন বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন, কিন্তু তাঁর বন্দুকে কোনও গুলি ছিল না। পরিস্থিতি যাতে শুধরোয়, সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সোনার দোকানের মালিকদের বলে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন দোকানে সিসি ক্যামেরা রাখেন। এর দাম মাত্র হাজার তিনেক টাকা। সঙ্গে অ্যালার্ম সিস্টেম ও রক্ষী মোতায়েনের কথাও বলা হয়েছে।। কিছু বড় দোকানে অবশ্য এ সব ব্যবস্থা আছে।
পুলিশ জানিয়েছে শহরের ছোট-বড় মিলিয়ে দোকানের সংখ্যা প্রায় তিনশো। রক্ষী রাখা সম্ভব না হলেও সব দোকানেই ক্যামেরা ও অ্যালার্ম ব্যবস্থা রাখা জন্য বলা হয়েছে। মৈনাকবাবু বলেন, ‘‘রোজ প্রতিটি সোনার দোকানে গিয়ে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে একটি বিশেষ টহলদারি দল তৈরি করা হয়েছে।’’
রবিবার জ্যোতিপ্রিয়বাবু এলাকায় সোনার দোকানের মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। নিরাপত্তা কী ভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস ও মৈনাকবাবু। নীলিমেশবাবু বলেন, ‘‘দোকান মালিকদের বলা হয়েছে, দোকানে শাটার, কাচের দরজা, কোলাপসেবল গেট রাখতে হবে।’’ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাবরা শহরের সোনার দোকানের নিরাপত্তা বাড়াতে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১২৯টি সিসি ক্যামেরা শহরের বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশের দু’টি মোটরবাইক-দল ওই সব সোনার দোকানে টহল দেবে। সে জন্য বাইকের তেল ব্যবসায়ীরা দিতে রাজি হয়েছেন।’’
ব্যবসায়ীদেরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের নিরাপত্তার জন্য যদি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে জন্য সামান্য কিছু খরচ করতে আপত্তি নেই।’’