ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডে ঘুরছে গরিব মানুষের স্বাস্থ্যকেন্দ্র

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য টাকা অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু জমি জটে আটকে রয়েছে কাজ। চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব মানুষ।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:০৫
Share:

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য টাকা অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু জমি জটে আটকে রয়েছে কাজ। চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব মানুষ।

Advertisement

পুরসভা এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের আওতায় ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। যেখানে বস্তি অথবা ইটভাটা রয়েছে সেখানেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করতে বলা হয়। ২০১৩ সালে ১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি দানের জমিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু পরে জমিদাতাদের পক্ষ থেকে পরিবারের একজনের পুরসভায় স্থায়ী চাকরির দাবি করা হয়। কিন্তু পুরসভা জানিয়ে দেয়, স্থায়ী চাকরি দিতে দেওয়া যাবে না। অস্থায়ী কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা যেতে পারে। এই টানাপড়েনে আটকে যায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজ। ফের জমির খোঁজ শুরু হয়।

পুরসভা সূত্রে খবর, এর পরে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাইয়া পাড়ায় হুগলি নদীর ধারের সরকারি জমিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কারণ ওই এলাকায় নদী বাঁধ-লাগোয়া একাধিক বস্তি রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হয়নি। তখন বরাদ্দ টাকা ফেরত যাওয়ার পরিস্থিতি হয়। সে সময়ে তড়িঘড়ি ২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত প্রাথমিক স্কুল বাড়ি সারিয়ে সেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি উদ্বোধনের আগেই বাড়ি সংস্কার, বিদ্যুৎ সংযোগ, আসবাবপত্র কেনার জন্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যায়। কিন্তু সেখানে দিন কয়েক চলার পরে ফের ঠিকানা বদল হয় ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। আপাতত সেটি ১০ ন‌ম্বর ওয়ার্ডের একটি একতলা বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে চলছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির স্থায়ী বাড়ির জন্য ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ধনবেড়িয়া গ্রামে নতুন জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু সেই জমিতেও রয়েছে সমস্যা। কারণ, জমিটি সরকারি তথ্যে শ্মশান হিসেবে চিহ্নিত। সেখানে যাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র না হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুরসভায় স্মারকলিপি দিয়েছেন। ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, চিহ্নিত জমিটি একটি মাঠের মধ্যে অবস্থিত। জমি সংযোগকারী রাস্তাটি মাটির এবং নিচু। আশপাশের ১০০ মিটারের মধ্যে জনবসতি নেই।

শেষমেশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কোথায় হবে?

১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রাজশ্রী দাসের দাবি, ‘‘আমাদের এলাকায় সরকারি জমিটি পিচ রাস্তার পাশে। তাই রাস্তা নির্মাণের জন্য জমির দরকার ছিল না। জমির কাছেই বস্তি এবং ইটভাটা ছিল।’’ যদিও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুতুল হালদারের পাল্টা দাবি, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালের দূরত্ব তিন কিলোমিটার। তাই সেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির দরকার নেই।

ডায়মন্ড হারবারের পুরপ্রধান মীরা হালদার জানান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চিহ্নিত জমিটি প্রায় ৪০ বছর আগে শ্মশান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এখন হয় না। এ ছাড়া, জায়গাটি প্রত্যন্ত। ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদারের কথায়, ‘‘এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই পুরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন