সৃজিতা চক্রবর্তী ও লক্ষ্মীশ্রী।
মহিলার ছিন্নভিন্ন দেহ মিলল রেল লাইনের পাশ থেকে। তখনও পরিচয় মেলেনি তাঁর। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই এলাকা থেকে কিছু দূরে বছর ছ’য়েকের এক শিশুকন্যার দেহ ভাসতে দেখা যায় পুকুরে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল ইছাপুর। শিশুটিকে স্থানীয় মানুষজন চিনতে পারেন। জানা যায়, তার নাম সৃজিতা চক্রবর্তী ওরফে দিয়া। দিয়ার মা লক্ষ্মীশ্রীও সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরে জানা যায়, রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া বছর আঠাশের মহিলার দেহ লক্ষ্মীশ্রীর-ই।
মা-মেয়ের মৃত্যু কেন ঘটল, তা নিয়ে ধন্ধে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মেয়ের গলায় কলসি বেঁধে পুকুরে ফেলে নিজে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই মহিলা। দেহ দু’টি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রেল পুলিশ ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট তদন্ত শুরু করেছে।
লক্ষ্মীশ্রীর স্বামী সুবীরবাবু রেলকর্মী। বুধবার রাতে তিনি বাড়ি ছিলেন না বলেই পুলিশকে জানিয়েছেন। লক্ষ্মীশ্রী মেয়েকে নিয়ে ছিলেন নবাবগঞ্জের সিনেমাতলায় বাপের বাড়িতে। সুবীরবাবু এ দিন সকালে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখেন, সেখানে মেয়ে-বৌ নেই। পরে তাঁদের মৃত্যুর খবর আসে।
সুবীরবাবুর জানান, স্ত্রী স্তন ক্যানসারে ভুগছিলেন। মেয়ের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল। শারীরিক অসুস্থতা স্ত্রীকে ক্রমশ বিষাদগ্রস্ত করে তুলছিল বলে দাবি সুবীরবাবুর। তাঁর কথায়, ‘‘ওর ধারণা হয়ে গিয়েছিল, আর বেশি দিন বাঁচবে না। কিছুতেই বুঝিয়ে উঠতে পারিনি, চিকিৎসায় সুস্থ থাকা যায়। কিন্তু এ সবের জেরে এমন পদক্ষেপ করবে ভাবতে পারিনি। মেয়েটাকেও নিয়ে চলে গেল!’’
ইছাপুরে ১৯ ও ২০ নম্বর রেলগেটের মাঝে এ দিন সকালে লক্ষ্মীশ্রীর দেহ পড়েছিল। তাঁর বাপের বাড়ির কাছাকাছি এলাকারই একটি পুকুরে দিয়ার দেহ ভাসতে দেখা যায়। গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে একটি পিতলের কলসি বাঁধা ছিল।
পুলিশের অনুমান, দিয়াকে মারা হয়েছে খুব ভোরে। কেউ টের পাওয়ার আগেই ঘুমন্ত মেয়েকে তুলে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান লক্ষ্মীশ্রীদেবী। দিয়ার গলায় কলসি বেঁধে পুকুরে ফেলার পরে দেহ ডুবে যেতেই তিনি চলে যান সেখান থেকে। কয়েক ঘণ্টা পরে দেহ ভেসে উঠলে ঘটনা জানাজানি হয়। ততক্ষণে অবশ্য লক্ষ্মীশ্রীদেবীও ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়েছেন। a