লড়াই: ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
বন্ধ নর্দমা। মশার উৎপাত বেড়েছে। কোনওটা কালো মোটাসোটা, কোনওটা আবার পাতলা ফিনফিনে ধূসর রঙা। মশাদের বাড়বাড়ন্তে রাশ টানতে এ বার পুরসভাগুলি কামান দাগতে চলেছে রাতেও। সামনেই পুজোর মরসুম। পুজোর সময়ে বৃষ্টির আশঙ্কা যেমন আছে, তেমনই মশাবাহিত রোগের ভয়ও তাড়া করছে পুর এলাকার বাসিন্দাদের।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে পুরসভাগুলিতে মশার উৎপাত নতুন কোনও সমস্যা নয়। ঘিঞ্জি এলাকায় অসংখ্য রাস্তাঘাট। নিকাশি নালাও বিস্তর। আর তার সঙ্গে জঞ্জালের সমস্যা তো আছেই। এই আবর্জনায় জমা জল, প্লাস্টিকে মুখ আটকানো নিকাশি নালা মশার আঁতুর ঘর। সেখানেই এ বার লাগাতার আক্রমণ হানতে চলেছে পুরসভাগুলি।
প্রতি বছর শিল্পাঞ্চলের পুর এলাকাগুলিতে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক হাজার। পুর হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকেরা হিমসিম খান ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে করতে। কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয় কিছু রোগীকে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরসভাগুলি দিনের পাশাপাশি রাতেও মশার তেল ছড়ানো, কামান দেগে ধোঁওয়া দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। ইতিমধ্যেই পানিহাটি, কামারহাটি, ব্যারাকপুর, ভাটপাড়া, নৈহাটিতে লাগাতার মশানিধন যজ্ঞ শুরু হয়েছে। বাকি পুরসভাগুলিও শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিন চাকার ভ্যানে এই ধোঁওয়া কামান নিয়ে যেখানে জঞ্জাল, নিকাশির জল আটকে আছে অথবা বড় রাস্তার পাশে গলি-ঘুপচিতে ধোঁওয়া দেওয়া শুরু হয়েছে।
দিনের বেলা মশার ধোঁওয়া দেওয়ার ব্যবস্থা আগেও ছিল। কিন্তু মশার উৎপাত বাড়ায় রাতেও ধোঁওয়া কামান নিয়ে ‘অ্যাকশন’ চলছে।
ভাটপাড়ার বাসিন্দা অজয় সাউ, নীলিমা সরকাররা বলেন, ‘‘মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে জানালায় নেট লাগিয়েছি। কিন্তু তাতে আর কতটুকু আটকায়? দরজা দিয়ে, ঘুলঘুলি দিয়ে মশা ঢোকে। দিনের বেলাতেই মশার এত উৎপাত, রাতে তো কথাই নেই। এখন দেখা যাক, কামান দেগে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় কিনা।’’
ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, ‘‘মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে এখন নিয়মিত ধোঁওয়া ও তেল ছড়ানো হয়। রোগ হওয়ার আগে তা ঠেকানোর পথ খুঁজছি আমরা।’’
লক্ষ পূরণে জোর কদমে কামান দাগা চললেও কামানের ধোঁওয়ায় মশা কি কমছে?
পুর এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, ধোঁওয়া দেওয়ার পরে কিছুক্ষণ মশা কমলেও, তা সাময়িক। ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘মশার প্রকোপ আছে। এই সমস্যা মোকাবিলার জন্য রাতেও কামান দাগা হচ্ছে। কিন্তু বাসিন্দাদেরও একটু সতর্ক হতে হবে। নিজের বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখা, জল জমতে না দেওয়ার ব্যাপার পুরবাসীদেরই খেয়াল রাখতে হবে।’’