বেকারদের আয়ের পথ দেখাচ্ছে নৈহাটি পুরসভা

বন্ধ কারখানা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, দু’মুঠো অন্ন সংস্থানের জন্য বিপথে ভেসে যাওয়ার বিকল্প উদ্যান। হঠাৎ শুনলে অবাক হওয়ার মতোই। মুখ্যমন্ত্রী সবুজায়নের কথা বলেন প্রায়ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০২:০০
Share:

পার্ক: নিজস্ব চিত্র

সবুজায়নের সঙ্গে বেকারদের আয়ের উৎসও দেখাচ্ছে নৈহাটি পুরসভা।

Advertisement

বন্ধ কারখানা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, দু’মুঠো অন্ন সংস্থানের জন্য বিপথে ভেসে যাওয়ার বিকল্প উদ্যান। হঠাৎ শুনলে অবাক হওয়ার মতোই। মুখ্যমন্ত্রী সবুজায়নের কথা বলেন প্রায়ই। পুরসভাগুলি গাছ লাগানোর কর্মসূচি নিয়েছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবসে। কিন্তু নৈহাটি পুরসভা শুধু গাছ লাগানোয় থেমে থাকেনি। সবুজায়নের সঙ্গে আয়ের উৎসও তৈরি করেছে পুরসভা।

নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাজানো বাগান পরিবেশকে বদলে দেয়। মানুষের মনকেও বদলায়। আমরা নৈহাটিতে সেই চেষ্টাই করছি। বেকার বেড়েছে ফলে হকারও বেড়েছে। তাঁদের রুটি রুজির অনেকটাই লাঘব করছে এই উদ্যানগুলি।’’ ইতিমধ্যেই সাতটি উদ্যান তৈরি করেছে নৈহাটি পুরসভা। ১, ২, ৯ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে উদ্যান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

কী ভাবে আয়ের পথ দেখাচ্ছে এই উদ্যান?

পুরসভা সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পুরপ্রধান জানান, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর নৈহাটিতে ঘিঞ্জি এবং আবর্জনাময় অঞ্চলগুলি বেছে উদ্যান বানানোর পরিকল্পনা করেছি। উদ্যান তৈরির সময় থেকেই বেকার কর্মসংস্থানের বিষয়টি মাথায় ছিল। মাটি কোপানো থেকে শুরু করে গাছ লাগানো এবং তার পরিচর্চা এবং পরবর্তী সময়ে বড় উদ্যানগুলি ঠিকায় দিয়ে তাতে স্থানীয় যুবকদের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। বহু বেকার এখান থেকে রোজগারের সুযোগ পেয়েছে বলে দাবি অশোকবাবুর। আরও পাবেন।

নৈহাটি পুরসভার উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল স্বপ্নবীথি, গোয়ালাপাড়া উদ্যান। স্বপ্নবীথি থেকে পুরসভার বছরে আয় হয় ৭৫হাজার টাকা। অন্যটি থেকে ৬০হাজার টাকা। এই উদ্যান দু’টি বড়। ওয়ার্ড ভিত্তিক বাকি উদ্যানগুলি ছোট। মূলত যেগুলি অলিখিত আবর্জনা ফেলার জায়গায় পরিণত হয়েছিল, আশপাশের লোকেরা দুর্গন্ধ আর ময়লার জন্য জানলা বন্ধ করে রাখতেন সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করে ছোট ছোট উদ্যান তৈরি করার কাজ শুরু করেছে পুরসভা। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘এখন বিকেলে যখন বৃদ্ধ আর শিশুরা ওই উদ্যানে গিয়ে বসে, খেলে তখন আর কোনও জানালা বন্ধ রাখতে হয় না। বিকেল গড়ালে সেখালে ফেরিওয়ালারাও ভিড় করে। উদ্যানগুলি তাঁদের নির্দিষ্ট আয়ের জায়গা হয়েছে।’’

পুরসভার এই উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় মানুষজনেরাও। হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শিক্ষক, ব্যবসায়ী থেকে নাট্যকর্মী উদ্যানের পক্ষে সকলেই। তবে এ ভাবে একটি শিল্পাঞ্চলের বেকারত্ব কতটা ঘুচবে? বাসিন্দাদের জবাব দিয়েছেন, ‘‘আগে তো পরিবেশটা সুস্থ হোক। মানুষ পথ ঠিক খুঁজে নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন