পেট্রাপোলে নতুন থানা, আশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা

দেশের বৃহত্তম স্থল বন্দর পেট্রাপোলের নিরাপত্তা বাড়াতে বৃহস্পতিবার চালু হল নতুন থানা। এ দিন দুপুরে হুগলির চুঁচুড়া থেকে ওই থানার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পেট্রাপোল শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৬
Share:

পর্দায় তখন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

দেশের বৃহত্তম স্থল বন্দর পেট্রাপোলের নিরাপত্তা বাড়াতে বৃহস্পতিবার চালু হল নতুন থানা।

Advertisement

এ দিন দুপুরে হুগলির চুঁচুড়া থেকে ওই থানার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উপলক্ষে বন্দরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বড় দু’টি টিভির মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখানো হয়। উপস্থিত ছিলেন আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) অজয় রানাডে, জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বনগাঁর সাংসদ মমতা ঠাকুর, এসডিপিও (বনগাঁ) অনিল রায়। ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এই এলাকায় থানার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’’

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে পেট্রোপাল থানাটি তৈরি হয়েছে। প্রথম ওসি হিসাবে কার্যভার নিয়েছেন কল্লোল ঘোষ।

Advertisement

এলাকার মানুষ ও ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, বন্দর এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে এখানে একটি থানা চালু হোক। সেই দাবি পূরণ হওয়ায় খুশি তাঁরাও। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়শনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্দর এলাকায় নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। দিন দুপুরে বা সাত সকালে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে খুন, ছিনতাইয়ে মতো ঘটনা ঘটিয়ে ফের বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। বন্দর এলাকায় ট্রাক থেকে মাল চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে প্রায়ই। নতুন থানা হওয়ায় এ বার আমরা আশ্বস্ত। আশা করছি বন্দর এলাকার নিরাপত্তা বাড়বে।’’

নতুন থানার ভবনটি হয়েছে নো ম্যানস ল্যান্ড এলাকার কাছে। সন্ধ্যার পরে সেখানে যেতে গেলে বিএসএফের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই সমস্যা যাতে না থাকে, মানুষ যাতে যে কোনও সময়ে নির্ভয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন, পুলিশ যেন সেই ব্যবস্থা করে। সীমান্ত এলাকায় ওই থানার সঙ্গে বিএসএফের যোগাযোগ যত নিবিড় হবে, ততই অপরাধমূলক কাজ বন্ধ হবে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এখানে মোবাইল ফোনের সমস্যা রয়েছে। ফলে থানার ল্যান্ড লাইন বিভিন্ন এলাকায় হোর্ডিং ও পোস্টার করে ছড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে যে কোনও প্রয়োজনে মানুষ দ্রুত থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

বনগাঁ থানা থেকে বন্দরের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। আইন-শৃঙ্খলাজনিত কোনও সমস্যা হলে থানা থেকে পুলিশ আসতে আসতেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। কোনও ঘটনা ঘটার পরে দ্রুত এলাকায় পৌঁছতে না পারলে দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে, এমন উদাহরণও রয়েছে। বনগাঁ থানার মোট আয়তন ১৫৭.০৬ বর্গ কিলোমিটার। ওই এলাকায় টহল দেওয়ার জন্য বনগাঁ থানার রয়েছে মাত্র তিনটি গাড়ি। অফিসারের সংখ্যা মাত্র ১৪ জন। আর সব মিলিয়ে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা ২৮ জন। ফলে ওই পরিকাঠামো নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিশকে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়।

কিন্তু বন্দর এলাকাতেই থানা হওয়ায় দুষ্কৃতীদের উপরে পুলিশি নজরদারিও বেশি থাকবে বলে পুলিশ মহলেরও আশা। বনগাঁ থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলারও উন্নতি ঘটবে বলেও স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন