পরিদর্শন: বাঁধ দেখতে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।
জোয়ার-ভাটার কারণে প্রতিনিয়ত ভাঙছে পাথরপ্রতিমার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের নদীবাঁধ। এ বার সেগুলির জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থায়ী বাঁধ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সেচ দফতর। শুক্রবার পাথরপ্রতিমার জি-প্লট পঞ্চায়েতের গোবর্ধনপুর এবং আরও কয়েকটি ভাঙন প্রভাবিত এলাকা দেখে এ কথা জানালেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজীববাবু বলেন, ‘‘আমরা সম্প্রতি দিঘায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। তাতে উঁচু নদীবাঁধ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েব ব্রেকার বা সমুদ্রের ঢেউ আটকানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।’’ তাঁর দাবি, কোটালের সময়ে জোয়ারের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতেই এই স্থায়ী প্রাকৃতিক বাঁধগুলি তৈরি হয়। গোবর্ধনপুরেও এ রকম বাঁধ বানানো হবে। জানা গিয়েছে, এই রকম বাঁধ প্রায় এক কিলোমিটার তৈরি করতেই ১৪ কোটি টাকার মতো খরচ হবে। গোবর্ধনপুরে প্রায় দেড় কিলোমিটার মতো এলাকা প্রবল ভাবে সমুদ্র-ভাঙনের মুখে পড়েছে।
এ দিন রাজীববাবু কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়েও সরব হন। তাঁর দাবি ২০১৪-১৫ সালে মাত্র ১২ কোটি টাকা আর গত বছর ১২ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিপজ্জনক নদীবাঁধ রয়েছে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার। সেই সব কাজ নিজেদের তহবিল থেকেই করছে রাজ্য সরকার।
প্রত্যন্ত এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী পৌঁছনো, তহবিল ছাড়াও জীব বৈচিত্রের উপরে প্রভাব পড়ে বলেও অনেক সময়ে স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বেশিরভাগ জায়গায় বোল্ডার দিয়ে বা শালবল্লার খাঁচা ফেলে নদীর জলের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। আর কেন্দ্রীয় তহবিল না মেলার জন্যই আয়লা বাঁধ তৈরিতে একটু দেরি হচ্ছে। তিনি জানান, রাজ্য সরকার নিজের খরচেই মৌসুনির বালিয়াড়া-সহ অন্যান্য এলাকায় আয়লা বাঁধ তৈরি করছে।
এ দিন গোর্বনপুর যাওয়ার আগে দক্ষিণ রায়পুরে সুতোরবাক নদীর বাঁধ বৈরাগী মোড়ের কাছে নদীবাঁধের ভাঙন ঘুরে দেখেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা। সমীরবাবু জানান, রামগঙ্গার ভারাতলা এবং বৈরাগী মোড়েও নদীবাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। সমীরবাবু লক্ষ্মীজনার্দনপুর থেকে হেরম্বগোপালপুর পর্যন্ত একটি বাঁধের দাবিও করেন রাজীববাবুর কাছে। মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।