প্রতীকী ছবি।
ইন্টারনেট পরিষেবা কবে চালু হবে তা কেউ জানেন না। ফলে বসিরহাটের মানুষের ভোগান্তিরও শেষ নেই।
শহরের ডাকঘরগুলিতে কাজ হলেও গ্রামের শাখাগুলিতে কোনও কাজ হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পেনশন মিলছে না। এমআইএসের টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। রান্নার গ্যাসও মিলছে না। এ ভাবে সংসার চালানো দায় হয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এমনকী ব্লক থেকে মহকুমা, জেলা সদর তরে জরুরি বার্তাও পাঠানো নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। রিপোর্ট পাঠানো বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্য দফতর পুরসভা, বিডিও দফতরের বিভিন্ন প্রকল্প আটকে গিয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় যুবশ্রীর আবেদনপত্র জমা দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার সময়সীমা আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত। এক যুবকের কথায়, ‘‘কবে এই সমস্যার সমাধান হবে জানি না। এ ভাবে অনেক কাজ আটকে যাচ্ছে। এমনকী ভাইয়ের কলেজে ভর্তির আবেদনপত্র কলকাতার এক সাইবার কাফেতে গিয়ে দাখিল করতে হয়েছে।’’
বাদুড়িয়ার এক ছাত্রের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে গত সপ্তাহে অশান্তি ছড়িয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, বাদুড়িয়া-সহ কিছু এলাকায়। তার জেরেই গোটা জেলায় ইন্টারনেট, ওয়াই-ফাই পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। এর জেরে দুর্ভোগ শুরু হয়।
বসিরহাটের এসডিও নীতিশ ঢালি বলেন, ‘‘দ্রুত বসিরহাটের অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আগামী দু-চারদিনের মধ্যে এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক করা হবে।’’
তবে ইতিমধ্যে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা এবং বাংলাদেশের ভোমরার মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ঘোজাডাঙা ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি কান্তি দত্ত বলেন, ‘‘দিন দু’য়েক বন্ধ ছিল বাণিজ্য। কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হয়ে উঠছে।’’
এ দিকে সম্প্রীতির বার্তা দিতে এই মহকুমার বিভিন্ন দিকে শান্তি মিছিল ও রাখি বন্ধন অনুষ্ঠান পালন করছেন দুই সম্প্রদায়ের লোকজন। কোনও কোনও এলাকায় পুলিশ ও সেনাদের মিষ্টি ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান তুষার সিংহ মণীষীদের ছবি নিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দেন এলাকায়। তুষারবাবু বলেন, ‘‘এলাকার দুই সম্প্রদায়ের লোকজনই এই মিছিলে হেঁটেছেন।’’ সমাজসেবী হাজি সফিকুল ইসলামের কথায়, ‘‘বাদুড়িয়ার মানুষ বরাবরই সম্প্রীতি রক্ষা করে চলেছে। কয়েকজন বহিরাগত এসে এখানকার মানুষের সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেননি।’’ বসিরহাটে বুধবারও বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির মধ্যেই টহল দিতে দেখা গিয়েছে আধা সামরিক বাহিনীকে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে পুলিশি তল্লাশিও চলেছে।