দুর্গা নয়, কোজাগরীতেই মাতে সদিয়াল

ইট পাতা রাস্তায় পর পর আলোর গেট। কিছুটা এগোলেই দেখা মিলবে উত্তর ভারতের স্বর্ণ মন্দিরের। সেখানেই দেবী লক্ষ্মীর অধিষ্ঠান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মথুরাপুর শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৭
Share:

সদিয়াল গ্রামের একটি মণ্ডপ। ছবি: দিলীপ নস্কর।

ইট পাতা রাস্তায় পর পর আলোর গেট। কিছুটা এগোলেই দেখা মিলবে উত্তর ভারতের স্বর্ণ মন্দিরের। সেখানেই দেবী লক্ষ্মীর অধিষ্ঠান।

Advertisement

দুর্গাপুজো নয়, মথুরাপুরের সদিয়াল গ্রামের বাসিন্দারা বরাবরই দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে ওঠেন। মণ্ডপ থেকে শুরু করে পুজোর কোনও ত্রুটি রাখেন না গ্রামের মানুষ। এ বার পুজোর বাজেট প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। স্বর্ণমন্দিরের আদলে গ্রামের মূল মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লক্ষ্মীর পাঁচালির গল্প। এলাকায় দু’টি পুজো করা হচ্ছে।

ওই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মৎস্যজীবী। নদী খাল বিলে মাছ ধরে কোনও রকমে তাঁদের সংসার চলে। অভাবের মধ্যে থাকা গ্রামের এই মানুষের কাছে দুর্গা পুজো মানে বিলাসিতা ছাড়া কিছু নয়। বছর কুড়ি আগে তাঁরা ধনের দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা শুরু করেছিলেন। সারা গ্রামের একমাত্র উৎসব বলতে এই লক্ষ্মী পুজোই।

Advertisement

পুজো উদ্যোক্তারা জানান, এই পুজোতেই নতুন পোশাক কেনা হয়। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনেরা আসেন। তবে এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের মানুষ তাঁদের জীবীকাও বদলেছে। এখন আর সবাই মাছ ধরার কাজে যুক্ত নয়। কেউ কেউ দিন মজুরের কাজেও যোগ দিয়েছেন। কর্মসূত্রে এখন বাইরেও থাকেন অনেকে। কিন্তু এই লক্ষ্মীপুজোতে সবাই গ্রামে ফিরে আসেন। পুজোর কমিটির সদস্য বাপি হালদার, নিতাই কয়াল, শঙ্কর পাইকেরা বলেন, ‘‘এ বারে পুজোয় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা বাজেট। সপ্তাহ খানেক ধরে আমাদের উৎসব চলে। অনেকেই এখানে ঠাকুর দেখতে আসেন। নানারকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।’’

স্বর্ণ মন্দিরের আদলে তৈরি পুজো মণ্ডপটির উচ্চতা প্রায় ৭২ ফুট। প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে ২৭ রকমের দানা ও কাঁচের চুড়ি দিয়ে।

তা ছাড়া বহু বছর ধরে মন্দিরবাজার, রায়দিঘি, মথুরাপুর ও জয়নগরের বহু গ্রামের মহিলারা নিয়ম করে দেবী লক্ষ্মীর পুজো করেন। সকালবেলা গঙ্গায় স্নান করে পুজোর কাজ গুছিয়ে লক্ষ্মীকে পুজো দেন। কথিত আছে, গঙ্গায় স্নান না করলে পুজো সম্পূর্ণ হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন