Basirhat School

পড়ুয়া ১১, ধুঁকছে স্কুল

স্কুল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯০৭ সালে স্কুলটি তৈরি হয়। সেই সময় বাঁশ, গোলপাতা, বিচালি দিয়ে তৈরি হয়েছিল স্কুল ঘর। ১৯৫৬ সালে সরকারি অনুমোদন মেলে।

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১১
Share:

একজন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র

কোনও ক্লাসে এক জন পড়ুয়া। কোনওটায় আবার দুই বা তিন। পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে বসিরহাটের খোর্দবালিয়া কেবি বয়েজ প্রাথমিক স্কুল। পাঁচটি ক্লাস মিলিয়ে স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা ১১ জন। শিক্ষক মাত্র দু’জন।

Advertisement

স্কুল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯০৭ সালে স্কুলটি তৈরি হয়। সেই সময় বাঁশ, গোলপাতা, বিচালি দিয়ে তৈরি হয়েছিল স্কুল ঘর। ১৯৫৬ সালে সরকারি অনুমোদন মেলে। তৈরি হয় টালির চাল দেওয়া ঘর। ২০০৪ সালে বসিরহাটের তৎকালীন সাংসদ অজয় চক্রবর্তীর সাংসদ তহবিলের টাকায় কংক্রিটের ছাদ দেওয়া নতুন স্কুল বাড়ি তৈরি করা হয়। প্রথম দিকে শতাধিক পড়ুয়া এবং তিন, চার জন শিক্ষক নিয়ে ভালই চলত স্কুল। তবে অভিযোগ, পরবর্তীকালে পঠনপাঠনের মান খারাপ হয়। ফলে কমতে থাকে ছাত্র সংখ্যা।স্কুলে ক্লাসরুমেরও সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ। উপর-নীচ মিলিয়ে স্কুলে মাত্র দু’টি ঘর। উপরে মিড ডে মিলের রান্না হয়। নীচের ঘরে এক সঙ্গেই চলে চারটি ক্লাস।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র অম্লান বন্দ্যোপাধ্যায়, সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘আমার বাবা কাকাও এই স্কুলে পড়েছেন। আমাদের সময়েও পাঁচ-ছশো পড়ুয়া, ৩-৪ জন শিক্ষক ছিলেন। এখন দিনে ২-৩ জন ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে। কোনও কোনও দিন তো একজন পড়ুয়াকেও স্কুলে দেখা যায় না।’’ প্রশাসনিক প্রচেষ্টা এবং জনসংযোগের অভাবেই স্কুলটির এই হাল হয়েছে বলে আশপাশের মানুষে দাবি। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল সামাদ বলেন, ‘‘একে তো ব্যস্ত রাস্তার পাশে স্কুল। দুর্ঘটনার ভয়ে অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের আমাদের স্কুলে ভর্তি করতে চান না। তার উপর দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে শিক্ষক কম। এর জেরে বেশিরভাগ অভিভাবকই সন্তানদের অন্যত্র ভর্তি করেছেন। ফলে কোনও ভাবেই ছাত্র জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না।’’ শিক্ষক তুষারকান্তি ঘোষের কথায়, ‘‘আশপাশে অনেক স্কুল হওয়ায় আমাদের স্কুলে কিছুতেই পড়ুয়া বাড়ছে না। পড়ুয়ার অভাবে স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও হয় না।’’

Advertisement

বসিরহাটের পূর্ব চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক আজিজুল হক বলেন, ‘‘মাত্র ১১জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে স্কুল চলতে পারে না। স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা বাড়াতে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। যে ভাবেই হোক ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রচার এবং জনসংযোগ করা হবে। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে
আনতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন