বাড়তি করের চাপে শীতে কমছে পর্যটক

পুজোর সময় থেকেই সাধারণত পর্যটকদের আনোগোনা শুরু হয়ে যায় সুন্দরবন অঞ্চলে। শীত পড়তে না পড়তে দেশি-বিদেশি পর্যটকে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সুন্দরবন। এ বার তেমন হয়নি। বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা না কমলেও দেশি পর্যকদের সংখ্যা এ বার অনেকটাই কম বলে দাবি ব্যবয়াসীদের।

Advertisement

সামসুল হুদা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩১
Share:

ভরসা: আপাতত বিদেশি পর্যটকেরাই অন্যতম ভরসা ব্যবসায়ীদের। নিজস্ব চিত্র

সুন্দরবন ভ্রমণের খরচ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসায়ীদের। শীতের শুরুতে পর্যটকের সংখ্যা কম বলেই তাঁদের দাবি।

Advertisement

পুজোর সময় থেকেই সাধারণত পর্যটকদের আনোগোনা শুরু হয়ে যায় সুন্দরবন অঞ্চলে। শীত পড়তে না পড়তে দেশি-বিদেশি পর্যটকে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সুন্দরবন। এ বার তেমন হয়নি। বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা না কমলেও দেশি পর্যকদের সংখ্যা এ বার অনেকটাই কম বলে দাবি ব্যবয়াসীদের।

তাঁদের অভিযোগ, জ্বালানি তেলের দাম অনেকটা বেড়েছে। বেড়েছে সুন্দরবনের ভ্রমণকর, গাইডখরচ-সহ অন্য নানা খরচও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে অগ্রিম বুকিংও মিলছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসের জন্য সাধারণত সমস্ত লঞ্চ, ভুটভুটি বুকিং হয়ে যায়। এ বার তেমন হয়নি। সুন্দরবনের পাখিরালয়, সজনেখালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় হোটেল, লজগুলিতেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রিম বুকিং হয়নি।

Advertisement

সত্যিই কি খরচ অনেক বেড়েছে?

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানালেন, গত বছর দু’দিন এক রাতে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য মাথা-পিছু খরচ ছিল আড়াই-তিন হাজার টাকা। এ বার সেই খরচ বেড়ে হয়েছে সাড়ে তিন-চার হাজার টাকা। আগে ভ্রমণ কর ছিল ৬০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। গাইড-খরচ ছিল ৪০০ টাকা। হয়েছে ৫০০ টাকা। এ ছাড়া লঞ্চ, ভুটভুটি-সহ অন্যান্য খরচও বেড়েছে। ফলে সব মিলিয়ে ভ্রমণ খরচ অনেকটাই বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন ট্যুর অপারেটররা। ভুটভুটি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আমিরুল মিদ্যে বলেন, ‘‘জ্বালানি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুন্দরবন ভ্রমণের খরচ বেড়েছে। এ নিয়ে সাধারণ পর্যটকদের বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে বলে সমস্যা হচ্ছে। খরচ শুনে অনেকে অগ্রিম বুকিং করতে চাইছেন না।’’

বন দফতর সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, পর্যটকেরা আসছেন না এটা ঠিক নয়। এখন সারা বছরই পর্যটকেরা সুন্দরবন আসেন। এ বারও আসছেন। শীত সবে পড়তে শুরু করেছে। আরও পর্যটক আসবেন বলে তাদের আশা। দফতর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর পরে সুন্দরবনে ভ্রমণ কর সামান্য কিছু বাড়ানো হয়েছে ঠিকই, তবে তা নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। রনথম্বর, করবেট ন্যাশনাল পার্ক-সহ অন্যান্য টাইগার রিজার্ভ এলাকা ঘোরার খরচ সুন্দরবনের চেয়ে অনেক বেশি বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা।

পাশাপাশি দফতরের কর্তাদের দাবি, সুন্দরবনে ভ্রমণ কর থেকে যে রাজস্ব আদায় হয়, তার ২৫ শতাংশ এলাকাবাসীর উন্নয়নের কাজে লাগানো হয়।

ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের এফডি নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন, ‘‘পর্যটন কর নিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে বলে কেউ অভিযোগ করেননি। চার মাস আগে থেকে সকলকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে খুব সামান্যই কর বাড়ানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন