‘সানডে হো ইয়া মনডে, রোজ খাও আন্ডে।’ সুস্বাস্থ্যের জন্য রোজ ডিম খেতে বলা হচ্ছে সরকারি বিজ্ঞাপনে। কিন্তু রবিবার সকালে অশোকনগর থানার বড়বাবু অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিম খাওয়ার কারণটা আলাদা। প্লাস্টিক ডিমের গুজব ঠেকাতে তাঁকে ওমলেট ও পোচ খেয়ে প্রমাণ করতে হল ডিম আসল!
কেন বড়বাবুকে আসরে নামতে হল?
শনিবার পিএল ক্যাম্প মোড় এলাকার একটি মুদি দোকান থেকে দু’টি ডিম কিনে নিয়ে বাড়িতে যান এক ব্যক্তি। রবিবার সকালে ওই ব্যক্তির স্ত্রী ফাটাতে গিয়ে দেখেন একটি ডিম পচা। অন্যটি ফাটিয়ে ভাজতে যান তিনি। কিন্তু সেটির থেকে ডিম ভাজার কোনও গন্ধ বের হচ্ছিল না বলে ওই মহিলার দাবি। ডিমটি তাঁর স্বাভাবিক বলে মনে হয়নি। খবর পৌঁছয় স্বামীর কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই গুজব রটে যে প্লাস্টিক ডিম পাওয়া গিয়েছে। এলাকার মানুষ এসে হাজির হন সেখানে। এরপর সবাই মিলে পিএল ক্যাম্প মোড়ের ওই দোকানে যান। দোকানির উপর শুরু হয় চোটপাট। দোকানির কথা শোনার মতো অবস্থায় কেউ ছিলেন না। পরিস্থিতি বেসামাল দেখে বাসিন্দাদের কেউ একজন খবর দেন অরিন্দমবাবুকে। তিনি দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গুজব ঠেকাতে পুলিশ ওই ব্যবসায়ীকে ডিম-সহ থানায় আসতে বলেন। সঙ্গে ওই ব্যক্তিও আসেন। উপস্থিত হন স্থানীয় কাউন্সিলর অনুপ রায়ও। থানা চত্বরে তখন মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে। ওসি সকলের সামনে ট্রে থেকে ডিম নিয়ে ফাটিয়ে প্লেটে ঢাললেন। কিন্তু কোনও অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া গেল না। কিন্তু একটি ডিম ফাটানোর পরেও মানুষ বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে ডিমগুলি প্লাস্টিক ডিম নয়।
সন্দেহ দূর করতে ট্রে থেকে কয়েকটি ডিম ফাটিয়ে তা দিয়ে ওলমেট ও পোচ তৈরি করালেন। সকলের সামনে নিজে খেলেন, অন্যদেরও খাওয়ালেন। একটি ডিম ফাটিয়ে তাতে গ্যাস লাইটার দিয়ে আগুণ ধরিয়ে দিলেন। প্লাস্টিক পোড়ার কোনও গন্ধ বের হল না।
এরপর অবশ্য ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস হয়, ডিমগুলি আসল। অনুপবাবু বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের ডিমের বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে এলাকার বাজারে গিয়ে ওই গুজবের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছি। সাধারণ মানুষ যাতে চট করে কোনও সিদ্ধান্ত না নেন।’’
ওমলেট, পোচ খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন বড়বাবু। কিন্তু মুখ ভার ব্যবসায়ীর। বিনা পয়সায় অনেকগুলি ডিম গচ্ছা গেল যে!