ভেড়ির জন্য গাছে কোপ, গ্রেফতার ১

শেষ পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ কাটার দায়ে সোমবার গ্রেফতার হয় বাসুদেব বেরা নামে স্থানীয় কাঠমিস্ত্রি। ওই দিনই তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সুন্দরবন পুলিশ জেলা হওয়ার পর থেকে পরিবেশের ক্ষতি করার জন্য এখানে কাউকে এই প্রথমবার গ্রেফতার করা হল

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

নামখানা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ০২:১৪
Share:

গাছ-কাটা: ঘন সবুজ ম্যানগ্রোভে এরকম ভাবেই কাটা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

খালের ধারে প্রায় ১ হেক্টর পতিত জমিতে চিংড়ি মাছের ভেড়ি তৈরি হচ্ছিল। সেজন্য কেটে সাফ করে দেওয়া হল কয়েক হাজার ম্যানগ্রোভ! নামখানার নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের ঈশ্বরীপুরে এ রকমই অভিযোগ উঠল।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ কাটার দায়ে সোমবার গ্রেফতার হয় বাসুদেব বেরা নামে স্থানীয় কাঠমিস্ত্রি। ওই দিনই তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সুন্দরবন পুলিশ জেলা হওয়ার পর থেকে পরিবেশের ক্ষতি করার জন্য এখানে কাউকে এই প্রথমবার গ্রেফতার করা হল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঈশ্বরীপুরের দক্ষিণে গুড়েরঘেরির কাছে নিজের কিছুটা রায়ত জায়গা ছিল অভিযুক্ত কাঠমিস্ত্রি বাসুদেব বেরার। কিন্তু সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছুটা সরকারি জমির ম্যানগ্রোভ কেটেও তৈরি হচ্ছিল চিংড়ি মাছের ভেড়িটি। গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে নামখানা রেঞ্জ অফিসে এ সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ার পর তদন্তে নামে বন দফতর। জেলা বন আধিকারিক তৃপ্তি সাহা বলেন, ‘‘অভিযোগ আসার পর স্থানীয় বন আধিকারিকদের দিয়ে তদন্ত করানোর পরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি আমরা।’’ পুলিশও আলাদা করে ঘটনার তদন্ত করে।

Advertisement

জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় বিঘে জমি থেকে গরান-বানির মতো বেশ কিছু লবনাম্বু উদ্ভিদের বেড়াজাল ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে সপ্তমুখী নদীর মোহনা থেকে। ওই এলাকায় নিয়মিত জোয়ারভাটা খেলে। ম্যানগ্রোভ কেটে ফেললে ভাঙনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তা ছাড়াও পরিবেশ নষ্ট হওয়ার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকার এক গ্রামবাসী রামচাঁদ সরেন বলেন, ‘‘পর পর এলাকা দখল করে মাছের ভেড়ি বানানো শুরু হয়েছে। আমাদের জীবীকাতেও টান পড়ছে।’’

নদীভাঙনের মুখে পড়া ঈশ্বরীপুরের মানুষ এর আগেও পরিবেশের এরকম ক্ষতি নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। খোদ নারায়ণপুরের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে গত বছর একই ভাবে ম্যানগ্রোভ কেটে ভেড়ি তৈরির অভিযোগ উঠেছিল। তখনও স্থানীয় মানুষ ওই প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন। প্রশাসনিক কর্তারা গিয়ে ঘুরে আসার পরেও সেই ভেড়ি বন্ধ হয়নি। কোনও অভিযোগও বন দফতরের তরফে করা হয়নি। কিন্তু সেই এলাকার পাশেই এই কাঠমিস্ত্রির বিতর্কিত প্রকল্পটি। সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘বিষয়টি বন দফতরের। তারা যে ঘটনার অভিযোগ করেছে আমরা তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন