জলের কারখানা। নিজস্ব চিত্র
পুকুরের জল তুলে ভরা হচ্ছিল বোতলে। তা-ই দিব্যি চালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল ‘মিনারেল ওয়াটার’-এর নাম করে।
বেআইনি জলের এমন এক কারবারিকে বুধবার গাইঘাটার রামপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নাম রামপ্রসাদ সরকার। কারখানাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আরও দু’জনের খোঁজ চলছে।
এ দিন বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ডিইবি) অভিযান চালায়। সঙ্গে ছিল গাইঘাটা থানার পুলিশ। অভিযোগ, একটি বাড়িতে বছর দু’য়েক ধরে চলছিল বেআইনি পানীয় জলের কারবার। কারখানার পাশেই একটি পুকুর। পুকুরের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু পাইপ। যা ওই ঘরের মধ্যে চলে গিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, পুকুর থেকে জল নিয়ে সেই জল পানীয় হিসাবে তৈরি করা হত।
ডিইবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কাজের জন্য সংস্থার সংশ্লিষ্ট সরকারি অনুমতি ছিল না। বেআইনি ভাবে কারবার চলছিল। ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর জল-ভর্তি জার, খালি জার ও কেমিক্যাল উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে একটি গাড়ি। পুলিশ সূত্রের খবর, পানীয় জলের ব্যবসা করতে হলে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন অনুমতি নিতে হয়। যা ওই সংস্থার নেই। সংস্থাটি থেকে উদ্ধার করা জল পরীক্ষার জন্য সরকারি ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে।
গ্রামবাসীরা জানান, গাইঘাটা এলাকায় কারবার জাঁকিয়ে বসেছিল। ২০ লিটার জল ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। স্থানীয় পুকুরের জলে আর্সেনিক থাকার আশঙ্কাও আছে। এক বাসিন্দা জানান, ওই ঘরের ভিতর কী প্রক্রিয়ায় পানীয় জল পরিস্রুত করা হত, তা কাউকে কখনও দেখতে দেওয়া হয়নি।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এ রকম বেআইনি পানীয় জলের কারবারের হদিস এই প্রথম নয়। এর আগে আমডাঙা, বাগদা, গোপালনগর, অশোকনগর এলাকাতেও ওই রকম কারখানা ডিইবি সিল করেছে। কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কারবার বন্ধ হয়নি।
পুলিশ ও ডিইবি সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জলের ব্যবসা করতে হলে প্রথমে জল দূষণ বা জীবাণুমুক্ত কিনা, তা উপযুক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ওই জল পরীক্ষার জন্য একজন কেমিস্ট রাখা বাধ্যতামূলক। তিনিই জল পরীক্ষা করে শংসাপত্র দেবেন। কিন্তু গাইঘাটার কারখানায় কোনও কেমিস্ট ছিলেন না।