ভ্যাকসিন চুরির নালিশ, হাতেনাতে পাকড়াও আয়া

হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘ওই আয়াকে আপাতত কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

অ্যান্টির‌্যাবিস ভ্যাকসিন হাসপাতাল থেকে চুরির অভিযোগে রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের হাতে ধরা পড়ল এক আয়া। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রোগীর আত্মীয়-স্বজনেরা ক্ষোভ উগড়ে দেন। হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘ওই আয়াকে আপাতত কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের ও তাঁর পরিবারের লোকজনের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ আয়াদের উপর। অভিযোগ, আয়ারা দুর্ব্যবহার করেন। রোগীর পরিবারের লোকজন জানান, এ দিন নিজের ব্যাগের মধ্যে ভরে কয়েকটি ভ্যাকসিন চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল ওই আয়া। চোখে পড়ে কয়েক জনের। তাঁরা আয়াকে ধরে ফেলেন। ব্যাগের মধ্যে থেকে কয়েকটি ভ্যাকসিন মেলে। ঘটনাটি তাঁরা মোবাইলে ভিডিয়ো করে রাখেন।

Advertisement

রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই আয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বছরের এই সময়ে বনগাঁ মহকুমা জুড়ে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা বেড়েছে। জখমদের অভিযোগ, অনেক সময়েই হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, ‘‘সরকারি হাসপাতালে কেন নজরদারি থাকবে না। হাসপাতালে এসে অনেক সময়ে ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ তা চুরি হয়ে বাইরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।’’

আয়াদের দাপট অত্যাচার বনগাঁ হাসপাতালে নতুন ঘটনা নয়। অভিযোগ, রোগীর দেখাশোনার জন্য আয়ারা টাকা নিলেও রোগীর প্রতি তাঁরা নজর রাখেন না। এক জন আয়া এক সঙ্গে তিন জন রোগীর দায়িত্ব নেন। ফলে রোগীদের ঠিক মতো দেখাশোনা করেন না। রাতে রোগীর উপরে নজর না রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগও আছে আয়াদের বিরুদ্ধে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি ভাবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কোনও আয়া থাকার কথা নয়। তাহলে এখানে তাঁরা কী ভাবে কাজ করছেন? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়ারা রোগীর বাড়ির লোক হিসাবে থাকেন। বাসিন্দাদের দাবি, ‘‘রোগীর সঙ্গে বাড়ির লোকজনকে আয়ারা থাকতে দেন না। কেউ থাকলে তার সঙ্গে আয়ারা এমন ব্যবহার করেন যে তিনি পালিয়ে আসতে বাধ্য হন।’’

হাসপাতালে আসা রোগীদের বাড়ির লোকের অভিযোগ, আয়ারা এতটাই শক্তিশালী যে প্রতিবাদ করেও লাভ হয় না। আয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিছু দিন পরে ফের রাজনৈতিক দাদাদের ধরে তাঁরা কাজ ফিরে পান। অভিযোগ, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকার ফলে আয়াদের কেউ কিছু করতে পারেন না। প্রায়ই আয়াদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন রোগীরা। এমনকী, তাঁদের গাফিলতিতে রোগী-মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন