বিপজ্জনক: ভাঙাচোরা সেতুতে পারাপার। ছবি: দিলীপ নস্কর
প্রায় একশো ফুট চওড়া খালের উপরে কংক্রিটের সেতুর এক দিকে ওঠার মুখে প্রায় ২০ ফুট অংশ বসে গিয়েছে। বছরখানেক আগে ফলতা ব্লকের কাঁটাখালি খালের উপরে কলাগাছি সেতুর ওই হাল হওয়ার পরে গ্রামবাসীরা অস্থায়ী ভাবে বাঁশের মাচা বানিয়ে যাতায়াত করছিলেন। এখনও পরিস্থিতি তেমনই।
বছর চল্লিশ আগে সেচ দফতর থেকে কংক্রিটের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে কার্যত কোনও সংস্কার হয়নি। নীচের অংশে চাঙড় খসে পড়েছে। জোয়ার-ভাটা খেলে ওই খালে। ফলে জলের তোড় থাকে ভালই। তবু কমজোরি সেতু ধরেই চলছে যাতায়াত।
বছরখানেক আগে বর্ষার রাতে সেতুর একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল। তারপরেই সেতুর এক মুখে বাঁশের বেড়া দিয়ে পারাপার বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, সেতুটি পাকাপাকি ভাবে সংস্কার হবে। কিন্তু বেশ কয়েক মাস কেটে যাওয়ার পরেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাসিন্দারা হতাশ। কাজ চালানোর মতো ব্যবস্থা করতে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় বাঁশের মাচা বানানো হয়। সেই বাঁশের মাচা ভেঙে গেলে আবার নতুন করে মাচা বানিয়ে পারাপার চলছে।
ওই সেতু দিয়ে পারাপার করেন ব্লকের মল্লিকপুর, গোপালপুর পঞ্চায়েতের আস্তা, বার আস্তা, কচুয়া, চাকা, নারায়ণবেড়িয়ে, দোনা গ্রাম-সহ ১৫-২০ গ্রামের মানুষ। এ দু’টি হাইস্কুল ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও যাতায়াত করে। মুমূর্ষ রোগীকে ফলতা গ্রামীণ হাসপাতাল বা ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলেও ভরসা এই সেতু। আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যা নামলে পারাপারে আরও সমস্যা বাড়ে।
স্থানীয় মানুষজন জানালেন, একাধির বার প্রশাসনের লোকজন পরিস্থিতি দেখে গিয়েছেন। সেতু পাকা তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষাও হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
এলাকার বাসিন্দা তথা গোপালপুর পঞ্চায়েতের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘‘সেতু অর্ধেক অংশ ভেঙে ফেলে নতুন করে করার জন্য ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি, সেচ দফতর— সকলকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সেতুটি যে বিপজ্জনক অবস্থায় আছে, তা মেনে নিয়ে ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির মঞ্জু নস্কর বলেন, ‘‘সেতুটি সংস্কার করতে যে টাকার প্রয়োজন, তা আমাদের তহবিলে নেই। বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে।’’ সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’