ভয়ে ভয়েই সাঁকো পার

ইছামতী নদীর উপরে লম্বা কাঠের সাঁকো। দু’পাশে রেলিং দেওয়া। পাটাতনও কাঠের। রোজ ওই সেতু দিয়ে গাইঘাটা ও স্বরূপনগরের কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হন।কিন্তু এখন এলাকার মানুষের কাছে ওই কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করা আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

বিপজ্জনক: ভাঙা সাঁকোতেই যাতায়াত। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ইছামতী নদীর উপরে লম্বা কাঠের সাঁকো। দু’পাশে রেলিং দেওয়া। পাটাতনও কাঠের। রোজ ওই সেতু দিয়ে গাইঘাটা ও স্বরূপনগরের কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হন। কিন্তু এখন এলাকার মানুষের কাছে ওই কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করা আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাঁকোর পাটাতনের কাঠ ভেঙে গিয়েছে। কোথাও কাঠ সম্পূর্ণ উঠে গিয়ে নদীর জল দেখা যাচ্ছে। রেলিংয়ে একটা অংশ ভেঙে পড়েছে।

Advertisement

স্থানীয় মানুষের পাকা সেতুর দাবি আছে। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বছর কয়েক আগে তৃণমূল পরিচালিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের টাকায় বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশন এই কাঠের সাঁকো তৈরি করে।

কী বলছে জেলা পরিষদ?

Advertisement

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধক্ষ্য নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশনকে বলা হয়েছে সাঁকো মেরামত করে দিতে।’’ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে রাজ্য সরকার একটি পাকা সেতুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘তিন লেনের একটি পাকা সেতুর জন্য রাজ্য সরকার ২০ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে। সেতু তৈরির জন্য কিছু জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সে জন্য পূর্ত দফতর জেলা পরিষদকে ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা দিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’ বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সোমেন মিশ্র বলেন, ‘‘কাঠের সাঁকোটি দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।’’

সাঁকোর এক পাড়ে গাইঘাটার গোপালপুর। অন্য পাড়ে স্বরূপনগরের তরণীপুর। বেহাল সাঁকো দিয়ে মানুষ হেঁটে, বাইকে, ছোট গাড়ি করে যাতায়াত করেন। চাষিরা ভ্যান, ইঞ্জিন ভ্যানে আনাজ নিয়ে হাটেবাজারে যান। ছোট গাড়ি করে ক্ষুদে পড়ুয়ার দল স্কুল যায়। পাঁটপোতার বাসিন্দা অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ইছামতীর দু’পাড়ের মানুষের কাছে সাঁকোটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এমন দশা হয়েছে, যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।’’

ছোটখাটো দুর্ঘটনা তো ঘটছেই। পাঁচপোতা এলাকার বাসিন্দা পূজা বিশ্বাস স্বরূপনগরের একটি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। তিনি রোজ স্কুটি নিয়ে সাঁকো পেরিয়ে স্কুলে যান। সম্প্রতি সেতু দিয়ে যাওয়ার সময়ে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন। ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিয়ে যেতে ভয় পান অভিভাবকেরা।

কবে পাকা সেতু হবে, সে দিকেই তাকিয়ে মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন