Deganga

হনুমানের ভয়ে বেরোতে পারছেন না দেগঙ্গার বাসিন্দারা

বন দফতর সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে হনুমান ও বাঁদরের একটি দল ওই এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৩:৩৫
Share:

সন্ধানে: হনুমানের খোঁজে ঘুমপাড়ানি গুলি ভরা বন্দুক নিয়ে দেগঙ্গায় ঘুরছেন বন দফতরের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির উঠোনে বসে আনাজ কাটছিলেন এক মহিলা। পিছন থেকে অতর্কিতে হানা দেয় হনুমানের দল। পালানোর সুযোগ পাননি তিনি। আঁচড়ে-কামড়ে তাঁর হাতের মাংস খুবলে নেয় হনুমানেরা। মিনতি কর্মকার নামের ওই মহিলা গুরুতর জখম অবস্থায় বারাসত হাসপাতালে ভর্তি।

Advertisement

মাসখানেক ধরে বারাসত-টাকি রোড সংলগ্ন ওই এলাকায় প্রবল তাণ্ডব চালাচ্ছে হনুমানের দল। শিশু থেকে বৃদ্ধ— তাদের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না কেউই। দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপা এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হনুমানের কামড়ে ইতিমধ্যে জখম হয়েছেন প্রায় ৫০ জন।

বন দফতর সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে হনুমান ও বাঁদরের একটি দল ওই এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল। বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে খাঁচা পেতে ওই হনুমান ও বাঁদরদের ধরা হয়। এ বার শুধুমাত্র হনুমানের দাপটের খবর পেয়ে মাসখানেক আগেই খাঁচা পাতা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। বন দফতরের বারাসত এলাকার রেঞ্জ অফিসার সুকুমার দাস সোমবার বলেন, ‘‘বাইরে খাবার না পেয়েই গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে পড়ছে হনুমান। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হনুমানের আতঙ্কে এখন ঘর থেকে বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। কারণ, একসঙ্গে ১০-১২টি হনুমান মিলে রোজ তাণ্ডব চালাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন বেড়াচাঁপার বাসিন্দা, ৮১ বছরের বৃদ্ধা পারুল রায়। সেই সময়ে আচমকাই একটি হনুমান তাঁর পায়ে কামড়ে ধরে। রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার শুরু করেন ওই বৃদ্ধা। এলাকার লোকজন তাঁকে ধরাধরি করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। এ দিন ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘‘আমার পায়ে সাতটি সেলাই পড়েছে। খুব যন্ত্রণা। আতঙ্কে ঘুমোতেও পারছি না।’’

খাঁচা পাতা সত্ত্বেও হনুমানগুলি ধরা না-পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা বন দফতরকে একটি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছেন, তাদের ধরতে যেন ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহার করা হয়। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে গত শনিবার থেকে ঘুমপাড়ানি গুলি ভরা বন্দুক নিয়ে বন দফতরের পাঁচ জন কর্মী দেগঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছেন। কিন্তু বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরেও হনুমানদের দেখা মেলেনি। এ বিষয়ে বেড়াচাঁপার বাসিন্দা, পেশায় স্কুলশিক্ষক সুদর্শন মাইতি বলেন, ‘‘বন দফতরের কর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলি নিয়ে আসছেন বটে, কিন্তু হনুমানদের তো দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বন দফতরের কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, ওই হনুমানদের শীঘ্রই ধরে ফেলা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন