প্রতীকী ছবি।
দু’বছর হতে চলল। এই সময়ের মধ্যে ডাকঘরের এক আধিকারিক গ্রেফতার হওয়া ছাড়া, পাশ বই ফেরত কিংবা টাকা উদ্ধার কিছুই হয়নি। ক্ষোভে সোমবার বসিরহাটের ওই ভ্যাবলা উপ-ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রাহকেরা। তাঁরা ওই ডাকঘরের বর্তমান আধিকারিক সহ-তিনকর্মীকে দফতরে ঢুকতে দেননি। বিক্ষোভে যোগ দেন তিন কাউন্সিলরও। অভিযোগ, টাকা ফেরতের দাবিতে ডাকঘরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কাজ হয়নি। শুধু প্রতিশ্রুতি মিলেছে। তাই বাধ্য হয়েই টাকা বিক্ষোভ দেখাতে হয়েছে।
বিক্ষোভের খবর পয়ে পুলিশ আসে। তাদেরকেও গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। পুলিশ আগামী তিন দিনের মধ্যে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিলে গ্রাহকেরা শান্ত হন।
গ্রাহকদের অভিযোগ সম্পর্কে বসিরহাট মহকুমার প্রধান ডাকঘরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সত্যেন্দ্রনাথ ওঝা কিছু বলতে চাননি। তবে ভ্যাবলা উপ-ডাকঘরের বর্তমান আধিকারিক সোমনাথ পাল বলেন, ‘‘দু’মাস হল এখানে এসেছি। শুনেছি কিছু গ্রাহকের সঞ্চিত টাকা নিয়ে একটা গণ্ডগোল হয়েছে।’’
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভ্যাবলা উপ ডাকঘরে বড় রকম আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে। ওই ডাকঘরে প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের ‘আরডি’ আছে। অভিযোগ, প্রায় ১৪০০ গ্রাহকের পাস বইয়ে স্ট্যাম্প দিলেও সেই টাকা দফতরের খাতায় না তুলে আত্মসাৎ করেছেন এজেন্ট মিত্রা দাস। ওই এজেন্ট বেপাত্তা হওয়ায় ঘটনাটি জানাজানি হলে তদন্ত শুরু হয়।
পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে ডাকঘরের আধিকারিক গ্রেফতার হন। দফতর তাঁকে সাসপেন্ডও করে। কাউন্সিলর পরিমল মজুমদার, ইলিয়াস সর্দার, স্বপ্না দাস, সোমনাথ দত্ত বলেন, ‘‘এই ডাকঘরে মিত্রা দাস নামে এক এজেন্ট পলাতক। লিখিত অভিযোগ জানানোর পরে বারাসত ডিভিশনের সুপারিন্টেডেন্ট শিখা মুখোপাধ্যায় এবং সত্যেন্দ্রনাথ ওঝা তদন্তে আসেন। পাস বই সিজ করা হয়। অথচ দু’বছর হতে চলল শুধুমাত্র এক আধিকারিক গ্রেফতার হওয়া ছাড়া কিছুই হল না।’’
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছোট জিরাফপুরের শান্তা মিত্র বলেন, ‘‘স্বামীর ভ্যান চালক। মেয়ের বিয়ে দেব বলে এক বেলা আধপেটা খেয়ে কিছু টাকা ভ্যাবলা ডাকঘরে রেখেছিলাম। সামনেই মেয়ের বিয়ে। অথচ রেকারিংয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও টাকা ফেরত পাচ্ছি না। টাকা না পেলে মেয়ের বিয়েটাই বন্ধ হয়ে যাবে।’’ বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি বলেন, ‘‘মানুষ যাতে তাঁদের টাকা ফেরত পান, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’’