ভাঙা সেতুই ভরসা পারাপারে

সাঁকোর উপরে পর পর বেশ কয়েকটি কাঠের পাটাতন উঠে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বড়রা পারাপার হতে পারলেও কচিকাঁচা বা বয়স্করা পারাপার হতে গিয়ে থমকাচ্ছেন। অন্যের হাত ধরে পেরোতে হচ্ছে সাঁকোর ভাঙাচোরা অংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলপি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৫
Share:

সেতুটির অবস্থা এরকমই। ছবি: দিলীপ নস্কর।

সাঁকোর উপরে পর পর বেশ কয়েকটি কাঠের পাটাতন উঠে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বড়রা পারাপার হতে পারলেও কচিকাঁচা বা বয়স্করা পারাপার হতে গিয়ে থমকাচ্ছেন। অন্যের হাত ধরে পেরোতে হচ্ছে সাঁকোর ভাঙাচোরা অংশ।

Advertisement

দেবকী মণ্ডলের বছর ছয়েকের শিশু খালের ও পাড়ে বেসরকারি স্কুলে পড়ে। সংসারের সব কাজ ফেলে নিয়ম করে ছেলেকে কোলে করে সাঁকো পার করা এখন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে দেবকীদেবীর। কুলপির করঞ্জলি পঞ্চায়েতে কাঁটাবেনিয়া ও হরিণখোলার সংযোগ খালের উপরে সাঁকোটির পাটাতন ভেঙে গিয়ে এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি। মাঝে মধ্যে পা গলে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

কুলপির বিধায়ক দেবরঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘বিষয়টি সেচ দফতরকে অনেক আগেই জানানো হয়েছিল। এখনও কেন কাজ শুরু হয়নি জানি না। ফের সেচ দফতরের কাছে আবেদন জানাব।’’

Advertisement

বহু বছর ধরে কাঁটাবেনিয়া খালের উপরে কাঠের সাঁকো দিয়ে পারাপার চলছে। প্রায় ৬০ ফুট লম্বা পুরনো সাঁকোটি পাকাপাকি ভাবে আজও সংস্কার হয়নি। মাঝে মধ্যে পঞ্চায়েত থেকে তালিতাপ্পি দেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। বর্তমানে সেতুর সাঁকোর কিছু পাটাতন ভেঙে গিয়ে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, সাঁকোর উপরে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যা নামলেই সমস্যা আরও বাড়ে। বয়স্ক মানুষজন অনেকে হামাগুড়ি দিয়েও সাঁকো পেরোন।

ওই সাঁকো দিয়ে সারা দিনে করঞ্জলি পঞ্চায়েত ছাড়াও কেওড়াতলা, ঢোলা পঞ্চায়েতের পদ্মপুকুর, আটজুমারি, হরিণখোলা, ভৈরবীতলা, কোঁচফল, তেলে, বাঁশতলা, মাদারপাড়া-সহ আশপাশের ৩০-৪০টি গ্রামের বাসিন্দারা পারাপার করেন। এ ছাড়া, কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার কলেজের পড়ুয়া এবং এলাকার বহু স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ওই সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় দুর্গাপুজো হয়। পুজোর আগে সাঁকো সংস্কার না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলে জানালেন স্থানীয় মানুষজন।

করঞ্জলি পঞ্চায়েতের কাঁটাবেনিয়া গ্রামের সদস্য শান্তনু কয়াল বলেন, ‘‘সেতুটি সংস্কারের জন্য বিধায়ক থেকে ব্লক প্রশাসনকে বলেছিলাম। সেখান থেকে ডায়মন্ড হারবার সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল। ডায়মন্ড হারবারের সেচ দফতরের বাস্তুকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আবার বিধায়কের কাছে যেতে বলেছিলেন।’’ এই পরিস্থিতিতে কী হাল বেরোবে, তা জানেন না শান্তনুবাবু।

সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমস্ত বিষয়ে এড়িয়ে গিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন