Jyotipriya Mallick Arrest

দীপাবলির শুভেচ্ছা, ফ্লেক্সেও উধাও ‘বালু’ 

জ্যোতিপ্রিয় ২০০১ সালে গাইঘাটা কেন্দ্র থেকেই জয়ী হয়ে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন। ২০০১ সাল থেকে একটানা ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত তিনি গাইঘাটার বিধায়ক ছিলেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৪
Share:

গাইঘাটায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে লাগানো ফ্লেক্স-এ উধাও বালুর ছবি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

গাইঘাটার চাঁদপাড়া এলাকায় অনেক বছর ধরেই বড় মাপের কালীপুজো হয়ে আসছে। এ ছাড়াও গাইঘাটার কলাসীমা, মহিষাকাঠির মতো এলাকায় পুজো হয়। তবে পুজো মূলত চাঁদপাড়া কেন্দ্রিক।

Advertisement

চাঁদপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতানেত্রীরা প্রচুর ফ্লেক্স লাগিয়েছেন। তাতে সাধারণ মানুষকে উৎসবের মরসুমে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। ফ্লেক্সগুলিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রমিক সংগঠনের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নারায়ণ ঘোষ, স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য অভিজিৎ বিশ্বাস, গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইলা বাগচী, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি গোবিন্দ দাসদের ছবি থাকলেও উল্লেখযোগ্য ভাবে কোনও ফ্লেক্সেই দেখা যাচ্ছে না বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ছবি।

জ্যোতিপ্রিয় ২০০১ সালে গাইঘাটা কেন্দ্র থেকেই জয়ী হয়ে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন। ২০০১ সাল থেকে একটানা ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত তিনি গাইঘাটার বিধায়ক ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবে গাইঘাটায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও কম নয়। স্থানীয় রাজনৈতিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে জ্যোতিপ্রিয় গাইঘাটা লাগোয়া হাবড়া কেন্দ্র থেকে জিতে হাবড়ার বিধায়ক হলেও গাইঘাটার মানুষের সঙ্গে, বিশেষ করে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক। এখানকার মানুষ তাঁদের প্রয়োজনে বালুদার (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাকনাম) দ্বারস্থ হতেন হামেশাই। জ্যোতিপ্রিয় গাইঘাটার তৃণমূলের রাজনীতির শেষকথা ছিলেন। দলের কেউ কেউ মনে করেন, ২০১১ সালে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং ২০১৬ সালে পুলিনবিহারী রায়কে গাইঘাটায় দলের বিধায়ক করার পিছনেও তাঁর ভূমিকা ছিল। গাইঘাটায় জ্যোতিপ্রিয় দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত আসতেন। মিটিং-মিছিল-সভা করতেন। দলীয় নেতাদের কী ভাবে কাজ করতে হবে, সেই পরামর্শ দিতেন। পুরনো কর্মীদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। সাম্প্রতিক সময়ে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতেও একাধিকবার গাইঘাটায় এসেছিলেন তিনি। গাইঘাটায় দলের অনেক নেতা-কর্মীই তাঁকে রাজনৈতিক অভিভাবক মানেন। ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে একটা সময়ে জ্যোতিপ্রিয় নিয়মিত আসতেন।

Advertisement

বিগত বছরগুলিতে কালীপুজো হোক বা দলের কোনও বড় কর্মসূচিতে জ্যোতিপ্রিয়ের ছবি থাকতই। এ বার না থাকায় দলেরই অনেকে ব্যথিত। তাঁদের এক জন, জ্যোতিপ্রিয়ের দীর্ঘ দিনের সহকর্মী, গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেন, "আমি নিজেও বুঝতে পারছি না, ফ্লেক্সে কেন বালুর ছবি দেওয়া হচ্ছে না। আমি দুঃখিত। এটা ভুলে গেলে চলবে না, দুর্দিনে বালুই এখানে সংগঠন শক্তিশালী করেছিলেন। তৃণমূলের আন্দোলন ওঁর হাত ধরেই এখানে সংগঠিত হয়েছিল। দল তো কোথাও বলেনি, বালুর ছবি দেওয়া যাবে না। তারপরেও তাঁর ছবি না থাকাটা পরিতাপের বিষয়।"

তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের প্রতিক্রিয়া, "স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অতি উৎসাহে নিজেদের মতো করে ফ্লেক্স লাগাচ্ছেন। কার ছবি থাকছে, কার থাকছে না— সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন