PMAY

আবাসের টাকা নিয়ে দুর্নীতি, জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে

একশো দিনের কাজের মতো আবাস যোজনার টাকা না পাওয়ায় বহু গরিব মানুষকে কাঁচা বাড়িতে কোনওরকমে থাকতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নামখানা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার বকেয়া টাকার দাবিতে দিল্লিতে ধর্না দিচ্ছে তৃণমূল। এর মধ্যেই আবাস যোজনার টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করলেন নামখানার বাসিন্দা স্নেহাশিস গিরি। অভিযোগ, প্রয়োজন ছাড়াই আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন অনেকে। সেই টাকা দিয়ে বাড়িও তৈরি করেননি। সরকারি টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্নেহাশিস।

Advertisement

একশো দিনের কাজের মতো আবাস যোজনার টাকা না পাওয়ায় বহু গরিব মানুষকে কাঁচা বাড়িতে কোনওরকমে থাকতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টির ফলে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শাসকদলের দাবি, কেন্দ্র পাকা বাড়ি তৈরির টাকা দিলে এই মৃত্যু এড়ানো যেত।

এই পরিস্থিতিতেই অভিযোগ এনেছেন স্নেহাশিস। তিনি দাবি করেন, বহু যোগ্য মানুষ আবাস যোজনার টাকা পাননি। পাশাপাশি অনেকেই প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও টাকা পেয়েছেন। শুধুমাত্র নামখানা পঞ্চায়েত এলাকার এমন ৪৯ জনের একটি তালিকা তিনি আদালতকে জমা দিয়েছেন। তালিকায় সরকারি চাকরিজীবী-সহ পাকা বাড়ির মালিকরাও রয়েছেন। প্রত্যেকের আবাস যোজনার টাকা পাওয়ার পক্ষে নথিও আদালতে জমা দিয়েছেন স্নেহাশিস। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবগণনম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ৬ সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে তদন্ত করে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

৪৯ জনের তালিকায় নাম আছে নামখানা পঞ্চায়েতের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী শিবনগর আবাদ এলাকার বাসিন্দা সন্তোষ ওঝার। স্নেহাশিসের অভিযোগ, বর্তমানে পেনশন প্রাপক সন্তোষ ওঝার পাকা দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তিনি তিন দফায় মোট এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পেয়েছেন। কিন্তু সেই টাকায় কোনও বাড়ি তৈরি করেননি। সন্তোষ বলেন, “আমার নামে আবাস যোজনার বাড়ি এসেছিল ঠিকই। আমি ওই টাকায় বাড়ি তৈরি করিনি।” বন দফতরের প্রাক্তন কর্মী শ্রীহরি প্রামাণিকের ছেলে অরুণ প্রামাণিকের নামও রয়েছে তালিকায়। অভিযোগ, অরুণ আবাস যোজনায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পান। সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অরুণ বাড়িও তৈরি করেছেন। কিন্তু আদৌ বাড়ি তৈরি করেননি। অরুণ বলেন, “আবাস যোজনার টাকা পেয়েছি। কিন্তু বাড়ি তৈরি করিনি।” টাকা নিয়ে কী করলেন, সে ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি কেউই।

হাইকোর্টে মামলাকারী আইনজীবী পার্থসারথী মণ্ডল বলেন, “যে ৪৯ জনের নামের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে, কেউই আবাসের বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন। তবুও তাঁরা পেয়েছেন। সেই নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। আদালত জেলাশাসককে তদন্ত রিপোর্ট জমা করতে বলেছেন।”

জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছি। যথাসময়ে তা আদালতে জমা দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন