Ganga Sagar Mela 2023

রাজ্যের পাঁচটি মন্দিরের পুজো দেখা যাবে সাগর মেলায়

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন সাগরতটে সন্ধ্যাআরতির ব্যবস্থা করা হবে। গত বছর একদিন সন্ধ্যা আরতির ব্যবস্থা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৪৮
Share:

পুণ্যস্নান।

ত্রিমাত্রিক মডেলের মাধ্যমে এবার গঙ্গাসাগর মেলায় তুলে ধরা হবে রাজ্যের পাঁচটি মন্দির। প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় অন্য রাজ্য তথা দেশ-বিদেশ থেকে বহু পুর্ণ্যার্থীরা আসেন। অনেক পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর মেলায় এলেও তাঁরা রাজ্যের পাঁচটি ঐতিহ্যবাহী মন্দির তারাপীঠ, কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, তারকেশ্বর ও জহুরা কালীবাড়ি দর্শনের সুযোগ পান না। এবার পুণ্যার্থীদের কথা মাথায় রেখে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে অস্থায়ী কাঠামোর মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে রাজ্যের ওই পাঁচটি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরকে। সেখান থেকে সরাসরি লাইভের মাধ্যমে ওই সব মন্দিরের পুজো দেখানো হবে। চাইলে পুণ্যার্থীরা সেখান থেকেই পুজো দিতে পারবেন।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থাপনার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলার মন্দির’। শুক্রবার বিকেলে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাধিপতি শামিমা শেখ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন সাগরতটে সন্ধ্যাআরতির ব্যবস্থা করা হবে। গত বছর একদিন সন্ধ্যা আরতির ব্যবস্থা ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যায় নির্দিষ্ট সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও, এবার পুণ্যার্থীদের কাছে গঙ্গাসাগর মেলা স্মরণীয় করে রাখতে ‘বন্ধন’ নামে শংসাপত্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাগর মেলা প্রাঙ্গণে ফটো-কিয়স্ক তৈরি করা হচ্ছে। সেই কিয়স্কে গিয়ে ছবি তুললেই তৎক্ষণাৎ মিলবে পুণ্যার্থীর নিজস্ব ছবি দেওয়া শংসাপত্র। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে ছাপানো এই শংসাপত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সাগরমেলা ভ্রমণের জন্য ধন্যবাদ জানানো হবে।

Advertisement

গঙ্গাসাগর থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত নজরদারি থাকবে। এ জন্য প্রায় ২১০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। গত বছর গঙ্গাসাগর মেলায় প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছিল। এবার পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৩০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রশাসনের।

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিং শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে যেখানে যেখানে সমস্যা থাকবে সেখানে ড্রেজিংয়ের কাজ চলতে থাকবে। কুড়ি ঘণ্টা যাতে ভেসেল চালানো যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। তিনটি পর্যায়ে ৩০টি ভেসেল চলবে।

পুণ্যার্থীদের জন্য থাকছে ৫০০ বেসরকারি বাস। তবে যাত্রী ভাড়া বাড়ানো হবে না। স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে এ বার ২১টি জেটি তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের পাশাপাশি ১৪২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিষেবা দেবে।

গঙ্গাসাগর মেলাকে পরিবেশ বান্ধব করা হচ্ছে। প্লাস্টিকমুক্ত জ়োন তৈরি করা হচ্ছে। মেগা কন্ট্রোল রুম থাকছে। ভেসেল, লঞ্চের সঙ্গে রাখা ডিভাইসের মাধ্যমে জানা যাবে কোথায় ভেসেল আটকে গিয়েছে কি না। তৎক্ষণাৎ উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হবে।

ইতিমধ্যে তিনটি হেলিপ্যাড তৈরি হয়ে গিয়েছে। গত বছরের মতো এ বছরও ই-স্নানের ব্যবস্থা থাকছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গঙ্গাসাগর মেলাকে তুলে ধরা হবে। মেলা মাঠের বর্জ্য দ্রুত সাফ করার জন্য দশ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। জঞ্জাল বহনের জন্য ৩০টি ‘ই-কার্ট’ থাকবে।

শামিমা বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলার অনেক উন্নতি হয়েছে। এই মেলাকে কুম্ভ মেলার সমতুল্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা চাই, গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার মর্যাদা দেওয়া হোক। আগে পুণ্যার্থীদের গঙ্গাসাগর মেলায় এলে কর দিতে হত। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সেই কর তুলে দিয়েছেন। পুণ্যার্থীদের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তাঁরা দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেতেন। আমাদের সরকার পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।’’ জেলাশাসক বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলাকে আরও উন্নত করতে আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। পরিবেশবান্ধব মেলা করা হবে। পুণ্যার্থীদের জন্য এ বার আমরা বাংলার পাঁচটি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরকে মেলা প্রাঙ্গণে তুলে ধরব। গঙ্গাসাগর মেলাকে পুণ্যার্থীদের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন