নেশার টাকা জোগাড়েই কি খুন

ব্যারাকপুরে তরুণী খুনের পিছনে অন্যতম কারণ স্বামীর মাদকাসক্তি। এমনই সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২২
Share:

রাজশ্রী চট্টোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) ও সুখবিন্দর সিংহ।

ব্যারাকপুরে তরুণী খুনের পিছনে অন্যতম কারণ স্বামীর মাদকাসক্তি। এমনই সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, রাজশ্রী চট্টোপাধ্যায় নামে ওই তরুণীর স্বামী সুখবিন্দর সিংহ প্রায় ন’মাস পঞ্জাবে থাকার সময়ে মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। তদন্তকারীরা বলছেন, ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিতে যেমন নেশার জাল দেখানো হয়েছিল, সুখবিন্দরও তেমনই কোনও চক্রে জড়িয়ে পড়ে। ফলে তার টাকার প্রয়োজন হচ্ছিল। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থায় ভাড়া খাটানো তার গাড়িটি বিক্রি করেও টাকার প্রয়োজন মেটেনি। তাই স্ত্রীকে খুন করে ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা নিয়ে ফের পঞ্জাবে পালানোর ছক কষেছিল সুখবিন্দর।

শনিবার সুখবিন্দরকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে তাকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু বিষয়ে ধন্দ এখনও কাটেনি। ফলে তাকে আরও জেরা করা প্রয়োজন। সেই জন্যই তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অন্য যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কই কি তাকে নেশার দিকে ঠেলে দিয়েছিল, নাকি তার আগে থেকেই মাদকে আসক্তি ছিল, সে কথাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, দু’বছর ধরে অ্যাপ-ক্যাব চালানোর আগে কার্যত বেকার ছিল সুখবিন্দর। তা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তিও হত। সেই সময়ে রাজশ্রীর দিদি তাদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করতেন। এর মধ্যেই আচমকা প্রায় ন’মাসের জন্য পঞ্জাবে চলে যায় সুখবিন্দর। স্বামীর অনুপস্থিতিতে অন্য যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় রাজশ্রীর। তাঁর সঙ্গে ঘর বাঁধারও পরিকল্পনা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ফিরে এসে টাকা জোগাড়ের জন্য ফন্দি করতে থাকে সুখবিন্দর। সম্প্রতি রাজশ্রী তাকে জানান, তিনি বিবাহ বিচ্ছেদ চান। তাতেই সুখবিন্দরের চিন্তা বাড়ে। কারণ, বিচ্ছেদ হলে রাজশ্রীর সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে তার। পুলিশের ধারণা, সেই জন্যই তড়িঘড়ি স্ত্রীকে খুনের ছক কষে সে। তার জন্য টিটাগড়ের এক জনের কাছ থেকে কিছু টাকা দিয়ে একটি ওয়ান শটার নেয়। কথা ছিল, কাজ হয়ে গেলে তা সে ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু স্ত্রীকে গুলি করার কিছু ক্ষণের মধ্যে লোকজন এসে পড়ায় সে আর আগ্নেয়াস্ত্রটি লুকোতে পারেনি। সেই অস্ত্রের সাহায্যেই তাকে ধরা আরও সহজ হয়ে যায় পুলিশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন