মৃতের ভোটার কার্ড হাতিয়ে জাল-চক্র, ধৃত 

বৃহস্পতিবার রাতে পাল্লা এলাকা থেকে পুলিশ ওই চক্রের দু’জনকে ধরেছে। তারা বাইকে তরল মাদক পাচারের করছিল বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোপালনগর শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪১
Share:

পাকড়া: পুলিশের জালে প্রতারকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ভুয়ো ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড তৈরি করে বাংলাদেশিদের কাছে তা চড়া দামে বিক্রির একটি বড়সড় চক্রের হদিস পেল গোপালনগর থানার পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে পাল্লা এলাকা থেকে পুলিশ ওই চক্রের দু’জনকে ধরেছে। তারা বাইকে তরল মাদক পাচারের করছিল বলে দাবি পুলিশের। ৫ লিটার তরল মাদক পুলিশ আটক হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সৌরভ বিশ্বাস ও অভিজিৎ বিশ্বাস। সৌরভের বাড়ি বনগাঁর চাঁপাবেড়িয়ায়। অভিজিৎ গোপালনগরের নহাটার বাসিন্দা।

ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পেরেছেন, তারা এ দেশের নাগরিকদের ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি ও বিক্রি চক্রেও জড়িত। পুলিশ তাদের নিয়ে স্থানীয় পোলতা এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে প্রচুর জাল ভারতীয় ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড উদ্ধার হয়েছে। পোলতা এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে তারা কারবার ফেঁদে বসেছিল। পুলিশ ওই ঘর থেকে, কম্পিউটার, প্রিন্টার, ল্যামিনেশন মেশিন ও ভোটার কার্ডের বেশ কিছু হলোগ্রামও উদ্ধার করেছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বনগাঁ মহকুমা শাসক, বনগাঁ পুরসভা, চাঁপাবেড়িয়া হাইস্কুল এবং বনগাঁ ও বাগদার বিএলআরও অফিসের ভুয়ো রবার স্ট্যাম্পও পুলিশ উদ্ধার করেছে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চোরাপথে দালাল ধরে এ দেশে আসার সময়ে বা ঢোকার পরে যে সব বাংলাদেশিরা পুলিশ-বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে, তাদের কাছে এই চক্রের সদস্যেরা ওই সব ভুয়ো পরিচয়পত্র বিক্রি করে। বাংলাদেশিরা মোটা টাকার বিনিময়ে ওই সব ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়ে আদালতের কাছে নিজেদের এ দেশের বাসিন্দা হিসাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে।

পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, তারা এক একটি ভুয়ো পরিচয়পত্র ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি করে। সরাসরি কোনও বাংলাদেশি তাদের কাছে আসে না। কয়েক হাত ঘুরে তাদের কাছে কাজের বরাত আসে। সেই কয়েক হাত ঘুরে বাংলাদেশিদের কাছে পরিচয়পত্র পৌঁছে যায়।

কী ভাবে ভোটার কার্ডের হলোগ্রাম সংগ্রহ হত?

জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, মৃত বা অন্যত্র চলে যাওয়া মানুষের ভোটার পরিচয়পত্র তারা সংগ্রহ করে। সেখান থেকে হলোগ্রাম সংগ্রহ করা হয়। সেই হলোগ্রাম ভুয়ো কার্ডে জুড়ে বিক্রি করা হয় সে সব। পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিতের কাছ থেকে পুলিশের একটি নকল পরিচয়পত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সে নিজেকে পুলিশ কর্মী হিসাবে পরিচয় দিত বলেও জানা যাচ্ছে।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ ওই চক্রের আরও কিছু সদস্যদের নাম পেয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন