নাবালিকার বিয়ে আটকে দিল পুলিশ

পুলিশ দেখে গ্রাম ছেড়ে বর পালাল। সঙ্গে কনের বাবা-মা পরিবারের অন্যেরাও। শনিবার রাতে আলোর মালায় সেজেছিল পানিতর গ্রামের একটি বাড়ি। বিয়ের আয়োজন শেষ। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করতে এসেছে নামখানার বর। তার দাবি, মুম্বইয়ে কাজকর্ম করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০১:৪০
Share:

পুলিশ দেখে গ্রাম ছেড়ে বর পালাল। সঙ্গে কনের বাবা-মা পরিবারের অন্যেরাও।

Advertisement

শনিবার রাতে আলোর মালায় সেজেছিল পানিতর গ্রামের একটি বাড়ি। বিয়ের আয়োজন শেষ। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করতে এসেছে নামখানার বর। তার দাবি, মুম্বইয়ে কাজকর্ম করে।

বরযাত্রী এবং প্রতিবেশীদের অনেকের খাওয়া-দাওয়া তত ক্ষণে শেষ হয়ে গিয়েছিল। ইতিমধ্যে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর যায় চাইল্ড লাইনে। বলা হয়, নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে, আটকান। খবর পেয়ে ঘটনার কথা বিডিও জানান বসিরহাট থানার পুলিশকে। সীমান্ত এলাকার গ্রাম। বলা তো যায় না কখন কী হয়! তাই লোকলস্কর নিয়ে বেরিয়ে পড়েন আইসি গৌতম মিত্র।

Advertisement

রাত বাড়তেই বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয় মেয়ের বাড়িতে। ইতিমধ্যে বিয়েতে বেঁকে বসে নাবালিকাও। তার কথায়, “পড়াশোনা করে বড় হব। তবেই বিয়ে করব।” কিন্তু কে শোনে কার কথা। ভাল পাত্র হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে কাঁটা মেয়ের বাড়ির লোকজন। শেষমেশ বাবা-মায়ের অনুরোধে শুরু হয় বিয়ের কাজ। সে সময়ে অনুষ্ঠান বাড়িতে ঢোকে পুলিশ। তাদের দেখে হবু বরের চোখ ছানাবড়া। সঙ্গীদের নিয়ে দৌড় মারে সে। পিছু নেন মেয়ের বাবা-মা। সীমান্তের ওপারে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিএসএফের তাড়া খেতে হয় সকলকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এক বাসিন্দার বাড়িতে ঢুকে তাদের খাটের তলায় আশ্রয় নেয় বর। বাকিরাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, নাবালিকার বিয়ে দেওয়া এবং তাকে বিয়ে করা দু’টি কাজই বেআইনি বলে দু’বাড়ির লোকজনকে বোঝায় পুলিশ। পুলিশের হাতে ধরা পড়লে ধরা না পড়তে হয়, এই আশঙ্কায় হবু বর সঙ্গীসাথীদের নিয়ে পিঠটান দেয়।

গৌতমবাবু বলেন, “মেয়েটির বাবা-মা জানান, তাঁরা গ্রামের নিরক্ষর গরিব মানুষ। লেখাপড়া কিছুই জানেন না। তাই মেয়ে নাবালিকা জেনেও বিয়ে দিচ্ছিলেন। তবে এই ভুল আর করবেন না।” মেয়েটিকে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড লাইনের কর্মকর্তাদের হাতে। চাইল্ড লাইনের পক্ষে আমিরুল ইসলাম বলেন, “চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি মেয়েটিকে বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করার কথা বলে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন