অটোর দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এ বার আসরে নামল উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে অটো চালকদের নিয়ে বৈঠক শুরু করা হয়েছে। গাইঘাটা ও গোপালনগর এলাকায় অটো চালকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। অন্য থানাগুলিতেও বৈঠক করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
দিন কয়েক আগে আনন্দবাজারে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় বেআইনি ডিজেল অটোর চলাচল ও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে অটোর রেষারেষির কথা প্রকাশিত হয়। তারপরেই পুলিশ এই বৈঠকের আয়োজন করে।
সম্প্রতি দত্তপুকুর এলাকায় যশোর রোডে অটোর রেষারেষিতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। তারপরেই পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন মানুষ।
ভাস্করবাবু জানান, অটোর রেষারেষি বন্ধ করা হবেই। পাশাপাশি, অটোতে যাত্রী সুরক্ষার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত বন্ধ করতে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
প্রশাসনের ওই বৈঠকে অটো চালকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ডিজেলচালিত কোনও বেআইনি অটো চলানো যাবে না। যাঁদের ডিজেল অটো আছে, তাঁরা যেন দ্রুত জেলা পরিবহণ দফতরে যোগাযোগ করে এলপিজি অটোর আবেদন করেন। চালকের ডান দিকে কোনও যাত্রী তোলা যাবে না। বাঁ দিকে একজন ও পিছনে তিনজন— মোট চারজন যাত্রী অটোতে নেওয়া যাবে। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স-সহ যাবতীয় নথিপত্র থাকতে হবে। ডিজেল বা রান্নার গ্যাসে অটো চালানো চলবে না। জেলা পুলিশ সুপার জানান, অটো চালকদের কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দেওয়া হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু তাঁদের বিষয়গুলি দ্রুত মেটাতে বলা হয়েছে। আর রাজ্য সরকার যদিও অটো-সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়, তা হলে তা অটো চালকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
কিন্তু অটো চালকেরাও কিছু সমস্যার কথা বৈঠকে তুলে ধরেছেন।
দিন কয়েক আগে গাইঘাটা থানার পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অটো চালকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে অটো চালকেরা জানিয়েছে, এলাকায় কোনও এলপিজি গ্যাসের পাম্প নেই। ফলে তাঁরা কী ভাবে গ্যাসে অটো চালাবেন। এই সমস্যা মেনে নিয়ে গাইঘাটার বিডিও বিরাজকৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘গাইঘাটা এলাকায় পাম্প তৈরির জন্য মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে জেলাশাসক বৈঠক ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
জেলা পরিবহণ দফতরের সরকারি সদস্য গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে অটো চলাচল বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই আমরা পদক্ষেপ করেছি। অটো চালকেরা আমাদের কাছে আবেদন করলেই বৈধ অটোর পারমিট দিয়ে দেওয়া হবে।’’ ওই কাজ দ্রুততার সঙ্গেই চলছে বলে তিনি দাবি করেন।