বাঁ দিকে, কদম্বগাছিতে চলছে লাঠি খেলা। ডান দিকে, বসিরহাটে তাজিয়া নিয়ে মিছিল। ছবি: সুদীপ ঘোষ ও নির্মল বসু।
মহরমের তাজিয়া নিয়ে মিছিল হল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা প্রান্তে।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষরেই বাস। বিজয়া দশমীর পরের দিনই মহরম হওয়ায় অধিকাংশ মণ্ডপে প্রতিমা বিসর্জন হয়নি। ফলে এ দিন সকাল থেকেই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা ছাড়াও ডিসি সদর হুমায়ুন কবির এ দিন রাত পর্যন্ত রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণে নামেন।
বুধবার কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ও ঘোষপাড়া রোডে মহরমের মিছিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে অতিরিক্ত গতিতে চালাতে গিয়ে দু’টি মোটরবাইকে ছ’জন পড়ে গিয়ে জখম হন। ব্যারাকপুর বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন গোটা শিল্পাঞ্চলে দু’শোটির বেশি বড় তাজিয়া বেরিয়েছে। মহরমের শোভাযাত্রাকে ঘিরে মেলাও বসেছে বেশ কয়েকটি জায়গায়।
বাদুড়িয়ার তিতুমিরের জন্মভিটা হায়দারপুর গ্রাম থেকে একটা বড় মিছিল বের হয়। কেওটশা গ্রামের ইবনে আবিতালেব মসজিদ প্রাঙ্গণে মিছিলটি এসেছিল। এলাকার আটলিয়া, কুলিয়া, সন্নিয়া, সলুয়া, মান্দ্রা, চারঘাট, কোটালবেড়িয়া, চাতরা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ মহরমের তাজিয়া, তাবুদ এবং হাতে হাতে বড় পতাকা নিয়ে ওই মসজিদ প্রাঙ্গণে পৌঁছয়।
অতীতে ওই প্রাঙ্গণে তিতুমির বাঁশের কেল্লা গড়ে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। এখনও ওই প্রাঙ্গণে তিতুমিরের স্মৃতি ফলক রয়েছে। এ দিন মিছিলের প্রথমে ছিলেন জেলা বাদুড়িয়ার বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলু, স্বরূপনগরের বিধায়ক বীণা মণ্ডল, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী-সহ অনেকে। মহরমের দিনে শোক মিছিলে অধিকাংশই ছিলেন কালো পোশাকে। ছিল রঙিন কাগজ, ফুল, জরি দিয়ে সুন্দর সুন্দর তাজিয়া। বীর শহিদ তিতুমির যেখানে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছিলেন, সেই মাঠে মহরমের অনুষ্ঠান শেষ হয় মাতমের মধ্যে দিয়ে।