পুজোর আগে বনগাঁ ও তার সংলগ্ন এলাকায় অপরাধমূলক কাজ রুখতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করল পুলিশ। বহু ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কী ভাবে ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখবেন, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। অতীতে দেখা গিয়েছে, দুর্গা পুজোর আগে বনগাঁ ও তার সংলগ্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেশি ঘটত। সীমান্তবর্তী শহর হওয়ায় নানা ধরনের চোরা কারবারিদেরও উপদ্রব দেখা যায়। বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ঢুকে এ দেশে নানা অপরাধমুলক কাজ করে বলে অভিযোগ উঠেছে নানা সময়ে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় যশোর রোডে বড়সড় কেপমারির কয়েকটি ঘটনাও ঘটছে। শহরের রাতের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে।
এসডিপিও (বনগাঁ) অনিল রায় জানান, ওই বৈঠকে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের প্রতিনিধি, পেট্রোল পাম্প মালিক, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। বনগাঁ পুরসভার সভাকক্ষে দু’ দফায় পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে আলোচনা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, ও পেট্রোল পাম্পগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই নেই। পাশাপাশি ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস ও পেট্রোল পাম্পগুলিতে অ্যালার্ম সিস্টেম রাখার কথাও বলা হয়েছে। সেই সিস্টেমের সঙ্গে জেলা বা মহকুমা পুলিশ কন্ট্রোলের যোগাযোগ থাকলে ভাল হয়। এতে কোনও ঘটনা ঘটলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারবে। রামনগর রোড ও যশোর রোডের পাশে একটি ব্যাঙ্কের সামনে থেকে কেপমারির ঘটনা বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। প্রায়ই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বয়স্ক মানুষ ও মহিলারা হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ব্যাঙ্কের বাইরে প্রধান গেটের সামনে সিসি ক্যামেরা বসানোর অনুরোধ করা হয়েছে। কেউ জাল টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিলে তা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। ব্যাঙ্ক, এটিএম, পোস্ট অফিস ও পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষকে বেসরকারি নিরাপত্তা রাখতেও বলা হয়েছে। পুলিশ ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা দেখতে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, পেট্রোল পাম্পে একটি ভিজিট বুক রাখা হবে। পুলিশ সেখানে গেলে সেই ভিজিট বুকে স্বাক্ষর করবে।
এখানে প্রায় তিনশোর বেশি সোনার দোকান রয়েছে। অন্য দোকানের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। অতীতে সোনার দোকানে বহুবার চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোনার দোকানের মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও পুলিশ আলাদা করে বৈঠক করেছে। সোনার দোকানগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসাতে বলা হয়ছে। বেশির ভাগ দোকানেই তা নেই। নিরাপত্তা রক্ষীও রাখতে বলা হয়েছে। অনিলবাবু বলেন, ‘‘পুলিশি টহল সর্বত্র বাড়ানো হবে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে রাতে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পুলিশ থাকবে। আমরাও রাস্তায় থাকব।’’ বনগাঁ বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সহ সম্পাদক দিলীপ মজুমদার বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা বসানো বা নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার সামর্থ সকলের নেই। আমরা চাই পুলিশি টহল বাড়ুক।’’