পুরসভার স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে পুজালিতে তৈরি হচ্ছে বৃদ্ধাবাস

সরকারি আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির আশায় আটকে না থেকে নিজস্ব তহবিল বাড়ানোয় আরও এক ধাপ এগলো পুজালি পুরসভা। সে কাজে পুজালি পুরসভার নতুন সংযোজন বৃদ্ধাবাস। তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এর পরিচালন ভার দেওয়া হবে কোনও সংস্থাকে।

Advertisement

জয়তী রাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৭
Share:

উদ্বোধনের অপেক্ষায় বৃদ্ধাবাস। ছবি: অরুণ লোধ।

সরকারি আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির আশায় আটকে না থেকে নিজস্ব তহবিল বাড়ানোয় আরও এক ধাপ এগলো পুজালি পুরসভা। সে কাজে পুজালি পুরসভার নতুন সংযোজন বৃদ্ধাবাস। তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এর পরিচালন ভার দেওয়া হবে কোনও সংস্থাকে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পুরসভা মাসে নির্দিষ্ট হারে ভাড়া নেবে। এমনই পুজালি পুরসভা সূত্রের খবর।

Advertisement

নিজস্ব তহবিল তৈরির এই পদ্ধতিকে স্বাগত জানাচ্ছেন অন্য পুর-কর্তৃপক্ষেরা। তাঁদের মতে, শুধু সরকারি সাহায্যের উপরে নির্ভর করে পুরসভা চালাতে বেশ অসুবিধা হয়। যেমন, দক্ষিণ দমদম, ভাটপাড়ার মতো পুরসভাগুলি সরকারের থেকে যে আর্থিক সাহায্য পায় তাতে মোট ব্যয়ের মাত্র ৩০ শতাংশ ওঠে। ছোটগুলির ক্ষেত্রে সমস্যা আরও।

হুগলি তীরের পুজালিতে প্রাকৃতিক সম্ভার প্রচুর। তা কাজে লাগিয়েই স্বনির্ভরতার চেষ্টা করছে পুজালি। কয়েক বছর আগে নদীর তীরে তৈরি হয়েছিল ছোট পিকনিক স্পট। পুরসভা জানাচ্ছে, বার্ষিক ১০ লক্ষ টাকা আয় হয় সেখান থেকে। তাই আয়তনে ও পরিকল্পনায় আরও বড় একটি পিকনিক স্পট ও উদ্যান তৈরি করছে পুরসভা। এই শীতেই সাধারণের জন্য খুলবে তার দরজা।

Advertisement

কলকাতা মেট্রোপলিটন অথরিটির (কেএমএ)-এর মধ্যে পড়ে এই পুজালি। পুরসভা সূত্রে খবর, ১০,০০০ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে হচ্ছে বৃদ্ধাবাসটি। পুরসভা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমিরাজস্ব দফতরের থেকে ৩৩ বছরের লিজে জমি নিয়েছে। এর জন্য প্রতি বছরই ভাড়া গুনতে হয়। ফণীভূষণ পাঠক রোডের উপরে পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে হচ্ছে এটি। প্রকল্পের জন্য খরচ ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা।

পুজালির মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ার সুজিত পাল জানান, বজবজ ট্রাঙ্ক রোড ধরে গেলে তারাতলা থেকে পুজালি বৃদ্ধাবাসের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। দোতলা ভবনটির এক তলায় রয়েছে একটি প্রশস্ত ঘর, প্রতীক্ষালয়, অফিসঘর, চিকিৎসকের ঘর, কর্মীদের ঘর, বিভিন্ন কাজের জন্য একটি ঘর, খাওয়ার ঘর ও রান্নাঘর। এ ছাড়া আবাসিকদের জন্য নীচে পাঁচটি ঘর রয়েছে এবং উপরে রয়েছে সাতটি ঘর। দু’টি তলায় রয়েছে টয়লেট ব্লক।

দোতলা বাড়িটির চার দিকে ঘিরে থাকবে ঘরগুলি। মাঝখান ফাঁকা। খোলা আকাশের নীচের ওই অংশে হচ্ছে গার্ডেন কোর্ট। দোতলায় রয়েছে ব্যালকনি এবং বেশ অনেকটা খোলা জায়গা। বয়স্কেরা এখানে বসে সময় কাটাতে পারবেন। সংলগ্ন বেশ কিছুটা জায়গায় সব্জি বাগান থাকবে। এখান থেকেই পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথে পৌঁছে যাওয়া যাবে পুজালি পুরসভার নেতাজি উদ্যানে।

পুরপ্রধান ফজলুল হক বলেন, ‘‘ছোট হওয়ার কারণে সরকারি সাহায্যও কম পায় পুজালি। পুরসভা স্বনির্ভরতার লক্ষ্যেই পিকনিক স্পট তৈরির পাশাপাশি বৃদ্ধাবাসের প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। সবুজ ধ্বংস নয়, বরং সেই সম্পদ ব্যবহার করেই আয় বাড়ানো হবে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে পরিচালিত হবে এটি। প্রতি মাসে আবাসিক পিছু গড়ে তিন হাজার টাকা করে নেবে পুরসভা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন