বাড়ছে মৃত্যু, তবু হুঁশ কই যাত্রীদের

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন দেশ জুড়ে অসংখ্য মানুষ মারা যান শুধু রেললাইনে কাটা পড়েই। কিন্তু তার পরেও সচেতনতা বাড়ছে না সাধারণ মানুষের মধ্যে।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্যারাকপুরের ১৪ নম্বর লেভেল ক্রসিং গেট পার করে রেললাইনের পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে স্টেশনে যাচ্ছিলেন বছর পঞ্চাশের এক প্রৌ়ঢ়া। সারা দিন কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। লাইন বরাবর রেলেরই তৈরি ওই রাস্তায় হাঁটার সময়ে কোনও ভাবে লাইনের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই পাশ দিয়ে যাওয়া দ্রুতগামী ট্রেনের হাওয়ায় তাঁর পরনের কাপড় কোনও ভাবে লেগে যায় ইঞ্জিনে। বৃহস্পতিবার কয়েকশো মানুষের সামনে আপ ভাগীরথী এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের চাকায় পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান ওই প্রৌঢ়া। কোনও মতেই বাঁচানো যায়নি তাঁকে।

Advertisement

শুধু ওই প্রৌঢ়াই নন পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৫ দিনে ব্যারাকপুরের ১৪ নম্বর গেটের কাছাকাছি ৬ জন কাটা পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে লাটবাগানের এক পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর মূল কারণ রাস্তায় জবরদখল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে রাস্তা দিয়ে ওই প্রৌঢ়া হাঁটছিলেন, তার অনেকটাই জবরদখল হয়ে বাজার বসছে। যাত্রীদের বক্তব্য, রাস্তাটি খুব একটা ছোট না হলেও আনাজ ও ফল বিক্রেতারা ব্যবসায় বসে যান লাইন ঘেঁষে। সন্ধ্যার পরে বাড়ি ফেরার মুখে অনেকেই সেখানে দাঁড়িয়ে যান কেনাকাটা করতে। তাতেই ভিড় বেড়ে গিয়ে রাস্তা সরু হয়ে গিয়ে বাড়ে বিপত্তি। অভিযোগ, রেল প্রশাসন, আরপিএফ সব জানলেও জবরদখল উচ্ছেদ করা নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন দেশ জুড়ে অসংখ্য মানুষ মারা যান শুধু রেললাইনে কাটা পড়েই। কিন্তু তার পরেও সচেতনতা বাড়ছে না সাধারণ মানুষের মধ্যে। রেলের তরফেও মাঝেমধ্যে কিছু বিজ্ঞাপন দেওয়া ছাড়া যাত্রী-সচেতনতা প্রসারের কোনও প্রয়াস তেমন চোখে পড়ে না।

Advertisement

রেলকর্তারা জানান, জবরদখল উচ্ছেদ আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়। রাজ্য সরকারের সাহায্য ছাড়া জবরদখল তোলা সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে যাত্রীদেরই সচেতন হতে হবে। যাত্রীরা দাবি জানিয়েছেন, রেল কর্তৃপক্ষ ব্যারাকপুরে ওই রেললাইন বরাবর লোহার ফেন্সিং গড়ে বাজার তুলে দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন