বর্ষায় বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা, মৃত্যু ৪ জনের

ট্রাকের সঙ্গে বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় দুই গাড়ির চালক ও এক পথচারীর মৃত্যু হল। শনিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে কুলপির ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের বাগাড়িয়া মোড়ের কাছে। জখম এক মহিলা-সহ ২০ জন। আহতেরা কুলপি গ্রামীণ ও ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলপি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০০:৩৯
Share:

আহতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ছবি: দিলীপ নস্কর।

ট্রাকের সঙ্গে বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় দুই গাড়ির চালক ও এক পথচারীর মৃত্যু হল। শনিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে কুলপির ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের বাগাড়িয়া মোড়ের কাছে। জখম এক মহিলা-সহ ২০ জন। আহতেরা কুলপি গ্রামীণ ও ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাত জনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৭টা নাগাদ কাকদ্বীপ থেকে এসডি ১৯ রুটের একটি বাস কলকাতার দিকে যাচ্ছিল। সে সময়ে ওই মোড়ের কাছে কাকদ্বীপগামী একটি আলু-বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারীকে পিষে দেয়। এরপরেই বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। দুই চালকের দেহ দরজা কেটে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে মারা যান ওই পথচারীও। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাক চালকের নাম নিখিলেশ মাঝি (৩৮)। বাড়ি কাকদ্বীপের চাঁপাখালি গ্রামে। বাসচালক ও পথচারীর নাম এখনও জানা যায়নি। জাতীয় সড়কে এই দুর্ঘটনার জেরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানজটও তৈরি হয়। পরে ক্রেন এনে গাড়ি দু’টি সরিয়ে দেওয়া হলে ঘণ্টাখানেক পরে গাড়ি চলতে শুরু করে।

অন্য একটি ঘটনায়, এ দিনই সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জাতীয় সড়কে কুলপিরই শ্যামবসুরচক মোড়ে ডায়মন্ড হারবার থেকে কাকদ্বীপগামী পাথর-বোঝাই একটি ট্রাক পিষে দেয় এক কিশোরকে। আনোয়ার মোল্লা (১৭) নামে ছেলেটি ঘটনাস্থলেই মারা যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। আনোয়ারের বাড়ি কচুবেড়িয়ায়।

Advertisement

কুলপির মধ্যে দিয়ে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক হটুগঞ্জ মোড় থেকে নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার গিয়েছে। গত কয়েক মাসে এই রাস্তায় ৩০টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৫ জন। জখমের সংখ্যা প্রায় ৫০।

বার বার দুর্ঘটনা ঘটায় আতঙ্কিত বাসিন্দা। বিষয়টি ভাবাচ্ছে প্রশাসনকেও। দুর্ঘটনা ঘটলেই স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করেন। নাজেহাল হতে হয় যাত্রীদের। প্রশাসনকে সেই অবরোধ তুলতে হিমসিম খেতে হয়।

বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তা নির্মাণের ত্রুটির জন্য প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্ষাকালে দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বাড়ে। বৃষ্টিতে পিচ্ছিল হয়ে যায় রাস্তা। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। ধাক্কা মারছে অন্য গাড়িকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কুলপি মোড় থেকে করঞ্জলি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সিংহেরহাট মোড় আবার রীতিমতো ‘দুর্ঘটনাপ্রবণ’ হয়ে উঠেছে।

পুলিশও এ কথা স্বীকার করেছে। তাদের আরও বক্তব্য, ছোটখাট বহু দুর্ঘটনার খবর থানা পর্যন্ত আসে না। অনেকে টাকা-পয়সা নিয়ে মিটমাট করে নেয়। বিষয়টি ডায়মন্ড হারবার মহকুমাশাসক থেকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

মহকুমাশাসক শান্তনু বসু বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে একাধিকবার জাতীয় সড়কের দফতরে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ ওই সড়কে ডিভাইডার থাকলে দুর্ঘটনা কম হবে বলে মনে করেন শান্তনুবাবু। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন