বকখালির হোটেল দরজা ভেঙে পাওয়া গেল যুবতীর দেহ

বৃহস্পতিবার দুপুরে বকখালির ঘটনা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, পরিচয়পত্র ছাড়াই হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ঘর দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩১
Share:

দেহ-উদ্ধার: কাকদ্বীপে।

‘দম্পতি’ পরিচয়েই হোটেলে রাত্রিবাস করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু রাত পোহাতেই হোটেলের ঘরে মিলল যুবতীর দেহ। পুরুষ সঙ্গীটি উধাও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে বকখালির ঘটনা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, পরিচয়পত্র ছাড়াই হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ঘর দিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, যুবতীর নাম দুর্গামণি বারুই (২৭)। বাড়ি নামখানার রাজনগরে। তাঁর পুরুষ সঙ্গীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহ, দুর্গামণিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।

পরিচয়পত্র ছাড়া বকখালির হোটেলের ঘরে থাকার অভিযোগ এর আগেও উঠেছিল। তার পরে কিছুদিন কড়াকড়ি হলেও কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, তা ফের সামনে এল এই ঘটনার পরে। হোটেলে যৌন ব্যবসার অভিযোগও নতুন নয় এখানে। এর আগেও কয়েকজন মহিলাকে একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এই ঘটনায় তেমন কারণ রয়েছে কিনা, তা পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবতী ও তাঁর পুরুষ সঙ্গী বুধবার বিকেলে একটি হোটেলে ওঠেন। বৃহস্পতিবার অনেক বেলা পর্যন্ত ঘরের দরজা খোলেনি। বারবার ডেকেও সাড়া না মেলায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ফ্রেজারগঞ্জ উপকুল থানার পুলিশ দরজা ভেঙে যুবতীর নিথর দেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দুর্গামণির দেহ পড়েছিল বিছানায়। ঘরে মদের কয়েকটি খালি বোতল এবং একটি মোবাইল ফোন মিলেছে। সেটি দুর্গামণির বলেই জেনেছে পুলিশ। হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছেন, হোটেলের রেজিস্ট্রারে যুবতীর পদবি ‘মাঝি’ বলে লেখা ছিল। কিন্তু পুলিশ পরে স্থানীয় সূত্রে জানতে পারে, তাঁর পদবি বারুই। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পরিবারের কেউ দেহ নিতে আসেননি। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে যুবতীর পুরুষ সঙ্গীর ছবি পেয়েছে পুলিশ। পরিচয়পত্র ছাড়াই শুধুমাত্র ওই যুবকের স্ত্রীর পরিচয়ে তাঁদের ঘর দেওয়া হল কেন, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি হোটেল কর্তৃপক্ষ। সুন্দরবন পুলিশ জেলার কর্তা তথাগত বসু বলেন, ‘‘হোটেলগুলিতে যে অবৈধ কোনও কাজ হয় না, তা নিশ্চিত করতে হবে হোটেলগুলিকেই। যাতে নিরাপত্তা বজায় থাকে, সে জন্য পরিচয়পত্র যাচাই করে তবেই ঘর দিতে হবে। আমরা শীঘ্রই ফের সেই নির্দেশ জারি করব।’’ তিনি জানান, যে সব হোটেল নির্দেশ মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হোটেলের তরফে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে থানায়। হোটেলটি বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জ লজ ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। সংগঠনের সভাপতি বিদ্যুৎ দিন্দা বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের সবগুলি হোটেলে পরিচয়পত্র-সহ অতিথিদের থাকতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই হোটেলে ঠিক কী ঘটেছিল, তা দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন