water logging

জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান অশোকনগরবাসী

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, কোথাও বাড়ির মধ্যে জল ঢুকে পড়েছে। কোথাও রাস্তায় জল। সাপ, পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৫
Share:

জলমগ্ন অশোকনগরের মোমিনপুর। ছবি: সুজিত দুয়ারি

এই মরসুমেও জল জমার ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ পেলেন না অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার বহু মানুষ। প্রতি বছর নিয়ম করে দুর্গা পুজোর আগের ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হওয়া নিজেদের ভবিতব্য বলেই ধরে নিয়েছেন এঁরা। এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা ঘুরে যান। সামনের বর্ষার আগে সুরাহা আশ্বাস দেন। তবে ফি বছর একই পরিস্থিতি হয়ে যায়!

Advertisement

এ বার কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পুরসভার ১৩, ২২, ৫, ৬, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি থামলেও সেই জমা জল বের করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
এক দিকে এলাকায় জ্বর, ডেঙ্গি ছড়িয়েছে। জমা জল বেড়েছে আতঙ্ক।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, কোথাও বাড়ির মধ্যে জল ঢুকে পড়েছে। কোথাও রাস্তায় জল। সাপ, পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। সোমা দাস নামে এক মহিলার কথায়, "এখানে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি সব জলমগ্ন। জমা জল বেরোনোর জন্য কোনও নিকাশি নালা নেই। জলের মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাচ্চারা এই জলের মধ্যে দিয়ে পড়তে যেতে পারে না।" এক মহিলার কথায়, "একহাঁটু জল এলাকায়। জনপ্রতিনিধিরা সব জানেন। কিন্তু তাঁরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে কিছু করেন না।" বাসিন্দারা জানালেন, প্রতি বছর জমা জলের কারণে তাঁদের পুজোর আনন্দই মাটি হয়ে যায়।

Advertisement

স্থানীয় কাউন্সিলর তারক দাস বলেন, "বাসিন্দাদের দাবি সম্পূর্ণ ঠিক। এখানে জল বেরোনোর কোনও নালা নেই। পুরপ্রধানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাসিন্দারা যদি তাঁদের বাড়ির সামনে থেকে জায়গা দেন নিকাশি নালা করতে, তা হলে পুরপ্রধান খুব দ্রুত তা করে দেবেন। জায়গা না দিলে তখন বিকল্প ব্যবস্থা ভাবতে হবে।"

জমা জল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না সিপিএম। অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবী কর জানান, তাঁর বাড়িতেও এ বার জল ঢুকেছে। তাঁর কথায়, "রাজ্যের যে ১৬টি পুরসভার ডেঙ্গি পরিস্থিতি বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার, সেই তালিকায় আমাদের পুরসভা আছে। অথচ, নালা আবর্জনায় ভরে থাকে। পরিস্কার করা হয় না। জল জমে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে। মানুষ জলমগ্ন হয়ে পড়ছেন।" তাঁর দাবি, "অনেক ঢালঢোল পিটিয়ে বিদ্যাধরী খাল সংস্কার করা হল। কিন্তু সেখানে শহরের জমা গিয়ে পড়ছে না। খাল দিয়ে জল বের হচ্ছে না।"

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, বিদ্যাধরী খাল-সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৮০টি পরিবার এ বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বৃষ্টিতে। তাঁদের ১৯ নম্বর মোড় কাঁকপুল হাইস্কুলের তুলে আনা হয়েছিল। এখন বেশিরভাগ পরিবার আবার বাড়ি ফিরে গিয়েছে। পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, "ওই সব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এ বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে পাম্প লাগিয়ে জল সরিয়ে দেওয়া হবে।" তাঁর দাবি, নিকাশি নালা পরিষ্কার হয়েছিল বর্ষার আগে। তুলনায় কম জল জমেছে। বিদ্যাধরী খাল সংস্কারের ফলে জমা জল বেরিয়ে যাচ্ছে। নিকাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধানে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন